সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আর লকডাউনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। কখনও পরিবারের কাছে ফেরার তাগিদে মাইলের পর মাইল হেঁটেছেন তো কখনও স্ত্রী-সন্তানের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলতে গিয়ে দিনভর হিমশিম খেয়েছেন। নিজের গ্রাম বা শহরে ফিরলেও ভিটেমুখো হতে পারেননি সংক্রমণের ভয়ে। তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। সেখানেও আরেক লড়াই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনামুক্ত থাকার চ্যালেঞ্জ সর্বক্ষণ। অবশেষে মিলেছে মুক্তি। সরকারি নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর বাড়ি ফিরছেন বিহারের হাজারো পুরুষ ও মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক। আর কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বেরনোর আগে তাই রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে তাঁদের হাতে তুলে নেওয়া হচ্ছে কন্ডোম এবং গর্ভ নিরোধক ট্যাবলেট।
২০১৬ সালের জাতীয় স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী, গোটা দেশের মধ্যে বিহারেই জন্মের হার সর্বোচ্চ। মহিলা পিছু শিশুর জন্মের হার ৩.৪। এতদিন পর আতঙ্ক কাটিয়ে বাড়ি ফিরে স্বামী-স্ত্রী ঘনিষ্ঠ হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন জন্মের হারও। সেই জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ স্বাস্থ্যদপ্তরের।
স্টেট হেল্থ সোসাইটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনোজ কুমার বলছেন, “এর আগে আমরা দেখেছি, মার্চ আর নভেম্বরে দোল, দিওয়ালি অথবা ছটপুজোর সময় সাধারণত বাড়ি ফেরেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এই দুই মাসের ঠিক ন’মাস পরই প্রসবের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। তারপরই আবার সংখ্যাটা কমতে থাকে। জন্মের হার এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি। সেই জন্যই এখন তাঁদের কন্ডোম ও গর্ভনিরোধক ওষুধ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এখনও পর্যন্ত ভিনরাজ্যে আটকে থাকা ২২ লক্ষেরও বেশি শ্রমিককে বিহারে ফেরানো হয়েছে। বর্তমানে শ্রমিক ট্রেনের সংখ্যা যদিও ধীরে ধীরে কমছে। এছাড়াও প্রায় ১০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক পায়ে হেঁটে কিংবা গাড়িতে নিজেদের রাজ্যে পৌঁছেছেন। যদিও ফিরে তাঁদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রাজ্যে ফেরা শ্রমিকরা অবশেষে বাড়ি ফিরছেন। তবে হেল্থ সোসাইটির চিন্তা একটাই। সচেতনতা অবলম্বন করে কন্ডোম কিংবা ওষুধের সঠিক প্রয়োগ করবেন তো এই শ্রমিকরা?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.