চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: লকডাউনের (Lockdown) দীর্ঘ ছুটি। তবে তাতে মোটেই কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখ রেখে বা বইয়ে মুখ গুঁজে অথবা ঘুরে বেরিয়ে সময় কাটায়নি আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ৫ পড়ুয়া। বরং নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তিতে শান দিয়েছে। যার ফল – মাত্র ৮০০ টাকা খরচেই ল্যান্ডমাইন ডিটেক্টর (Landmine Detector) বানিয়ে ফেলেছে তারা। অনলাইন পড়াশোনার ফাঁকেই তৈরি করা হয়েছে এই প্রোজেক্ট। প্রোজেক্টের নাম দেওয়া হয়েছে “অ্যান্ড্রয়েড ফোন কন্ট্রোলড ল্যান্ডমাইন ডিটেক্টর।” যুদ্ধক্ষেত্র তো বটেই, ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটিকে কাজে লাগানো যাবে। এই ডিটেক্টরটি দশ মিটার দূর থেকে মোবাইল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
করোনা কালে কলেজ অনেকদিন বন্ধ থাকায় আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (Asansol Engineering Collge) পড়ুয়া সৃজা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভম দাস, স্বরূপ বিট, সৃজা ঘোষ ও সুপ্রিয় মণ্ডল অনলাইনে এই প্রজেক্ট নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলেছিল। সবাই বাড়িতে থেকেই আলাদা আলাদাভাবে এই প্রোজেক্টের জিনিসপত্রগুলি তৈরি করে। পরে একদিন সবাই মিলে এক জায়গায় হয়ে এই প্রোজেক্টের অ্যাসেম্বলিংয়ের কাজটি সম্পূর্ণ করেন। এই পাঁচজনই কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। খেলনা গাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে এই যন্ত্রটি। যন্ত্রটি মোবাইল ফোনের অ্যাপ্লিকেশনের দ্বারা ব্লুটুথের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন।
খেলনা গাড়িটির সামনে রয়েছে তামার কয়েল। সেখান থেকে একটি প্রোগ্রামিং করা মাইক্রোকন্ট্রোলার লাগানো হয়েছে। যন্ত্রে একটি বাজ়ারও (Buzzer) লাগানো হয়েছে। এই কয়েলটির কাজ হল, যখন কোনও ধাতব বস্তু কয়েলটির সামনে আসবে তখন সেটি সিগন্যাল পাঠাবে মাইক্রোকন্ট্রোলারে ও তারপরে বাজ়ার থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করবে। পড়ুয়াদের দাবি, এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই এই যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ল্যান্ড মাইন খোঁজা যেতে পারে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সুপ্রিয় মণ্ডল বলছে, ”এই প্রকল্পটি তৈরি করতে আমাদের মাত্র ৮০০ টাকা খরচ হয়েছে।” ছাত্রী সৃজা ঘোষের কথায়, ”ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।” আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য বলেন, ”এর আগে অটোমেটিক স্যানিটাইজার মেশিন তৈরি করেছে পড়ুয়ারা। এবার বাড়িতে বসে অভাবনীয় প্রকল্প তৈরি করে ফেলল কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। আমরা গর্বিত এই পড়ুয়াদের জন্য।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.