সুব্রত বিশ্বাস: পুজোর (Puja) বাকি এখনও চার মাস। এখন থেকেই বইতে শুরু করল বেড়াতে যাওয়ার বাতাস। তার দমকা হাওয়ার তেজ এতটাই যে, ট্রেনের বুকিং (Train Booking) শুরু হতেই ‘বনেদি স্পটে’ যাওয়ার টিকিট মুহূর্তে শেষ হয়ে যায়। কোভিড রুদ্ধ দু’বছরে হাঁপিয়ে উঠেছিল বাঙালি। তাই এবার কোভিডের দাপট কমতেই পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার হিড়িক এতটাই যে, সারা রাত জেগে টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন তাঁরা।
শহরের ভিড় এড়াতে অনেকেই ভোররাতে যান ধরে পৌঁছে যান শহরতলির স্টেশনের রিজার্ভেশন কাউন্টারে (Reservation Counter)। সেখানে গিয়েও অধিকাংশ মানুষই নিরাশ হন। বাগবাজার থেকে বালি গিয়েও নিউ জলপাইগুড়ির টিকিট পাননি অরুণাভ চক্রবর্তী। তাঁর আক্ষেপ, “এবার হয়তো পুজোয় আর বেড়াতে যেতে পারব না।” অরুণাভবাবুই নয়, শয়ে শয়ে বাঙালি আজ ব্যর্থ মনোরথে বাড়ি ফিরেছেন। সকাল আটটায় অ্যাডভান্স রিজার্ভেশন কাউন্টার খোলার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ‘কুলীন’ ভ্রমণস্থলে যাওয়ার ট্রেনগুলির বুকিং শেষ।
শুক্রবার দেওয়া হল ১ অক্টোবরের টিকিট। অর্থাৎ ওই দিন এবার পুজোর ষষ্ঠী। এদিনের টিকিট সংরক্ষণের চিত্রে একেবারে স্পষ্ট, এবার বাঙালি ভিড় জমাচ্ছে পাহাড়ে। তাই চাহিদার নিরিখে সর্বাগ্রে উত্তরবঙ্গগামী (North Bengal) ট্রেনগুলি। হরিদ্বারও নিজের মহিমায় টানছে ভ্রমণপিপাসুদের। পাহাড়ের টান চিরকাল অমোঘ হলেও সাগর পিছিয়ে নেই মোটেও। পুজোতে পুরীতেও (Puri) বাঙালির ভিড় হবে, এটা বুকিং শুরুতেই স্পষ্ট। পূর্ব রেলের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার অ্যাডভান্স রিজার্ভেশন কাউন্টার খোলার পাঁচ মিনিটেই বুকিং শেষ হয়ে যায়। শুরু ওয়েটিং লিস্ট। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ওয়েটিং লিস্টের টিকিট কাটেন যদি ভাগ্যে ‘শিকে ছেঁড়ে’।
ওয়েটিংয়ের তালিকা এতটাই দীর্ঘ হয়ে যায়, যে ‘নোরুম’-এর ধাক্কায় টিকিট দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কামরূপ ও দার্জিলিং মেলে বুকিং শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এনজেপির টিকিট নোরুম হয়ে যায়। দুপুর একটা নাগাদ পদাতিক এক্সপ্রেসে স্লিপারে ওয়েটিং লিস্টে ৩৩১, থ্রিএসিতে ওয়েটিং ২৩৮, টুএসিতেও ওয়েটিং ৯৯-এ দাঁড়িয়ে। কাঞ্চনজঙ্ঘা ও সরাইঘাটে ওয়েটিং স্লিপারে একশোর কাছাকাছি, এসিতে ওয়েটিং ষাটের উপরে।
হরিদ্বারের দিকের ট্রেন উপাসনা ও দুন এক্সপ্রেসে স্লিপারে ওয়েটিং যথাক্রমে ২৮৪ ও ২০০। থ্রি এসিতে উপাসনার ওয়েটিং ২১৭ হলেও দুন এক্সপ্রেসে ৫০ ওয়েটিং ছিল একই সময়ে। দুপুরে পুরী এক্সপ্রেসে স্লিপারে ওয়েটিং ৩৭৭, জগন্নাথ এক্সপ্রেসে ওয়েটিং ২৪৬। থ্রিএসিতে যথাক্রমে ওয়েটিং ৯৪ ও ৭৪।
দিল্লিগামী রাজধানীর অবস্থা তথৈবচ। তবে মুম্বই ও চেন্নাই অনেকটাই পিছিয়ে । গীতাঞ্জলি ও মুম্বই মেলের প্রতিটি ক্লাসের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে ষষ্ঠীর দিনের। একই দিনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও মাদ্রাজ মেলে আরএসি। পুজোর দিনগুলিতে ট্রেনে ও ফুড প্লাজায় বাঙালি খাবার পরিবেশনের জন্য পরিকল্পনা নিয়েছে আইআরসিটিসি বলে জানান সংস্থার জেজিএম মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.