সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: এক বছর আগে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সরলীকৃত হয়েছে সিকিমে প্রবেশের পথ। যার ফলে এক ধাক্কায় সিকিম-সহ দার্জিলিং পাহাড়ে পর্যটক সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে দ্বিগুণ। সম্প্রতি সিকিম সরকারের পর্যটন দপ্তরের তরফে প্রকাশিত একটি হিসেবে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। যার ফলে ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে সিকিম লাগোয়া অন্য পর্যটনগুলোও। ফলে সমগ্র পর্যটন সার্কিট খুশিতে মাতোয়ারা। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভাষাগত মিল দেশের এই অংশের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় করেছে। আরও পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে তরাই-ডুয়ার্স–পাহাড়ের পর্যটনকে দেশের মধ্যে শীর্ষ সার্কিট করে গড়ে তুলতে।”
এরাজ্যের দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়ং, মিরিক, সান্দাকফু তো বটেই, এখন গ্যাংটক, লাচুং, ইয়ুমথাং, লাচেন ও ছাংগুতেও পা পড়ছে বাংলাদেশি পর্যটকদের। সিকিম পর্যটন দপ্তরের তরফে প্রকাশিত পর্যটকের সংখ্যার হিসেব দিয়ে জানানো হয়েছে ২০১৮ সালে যেখানে সিকিমের পর্যটক সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার ১৭২ জন। সেখানে ২০১৯ সালে এক ধাক্কায় তা বেড়ে হয়েছে এক লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৮৮ জন। যা প্রায় দ্বিগুণ এর কাছাকাছি। পর্যটকের সংখ্যার এই বৃদ্ধি মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার ৫৪২ জন বাংলাদেশ এবং ৫৬ হাজার ৭২৮ জন নেপাল থেকে এসেছেন বলে সিকিম পর্যটন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। সরকারিভাবে না মিললেও বেসরকারি তথ্যের হিসেবে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং পাহাড়েও পর্যটকের হিসেবে এই সংখ্যার কাছাকাছি। যাঁরাই সিকিম ঘুরতে এসেছেন, ঘুরে গিয়েছেন এরাজ্যের পাহাড়েও।
সিকিম ট্যুরিজমের পরামর্শদাতা রাজ বসু জানিয়েছেন, সিকিমে যাঁরা আসছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই কালিম্পং ও দার্জিলিংকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এরাজ্যেও সেই পর্যটক দু’একদিন কাটিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে দু’জায়গাতেই ঘুরতে আসার উদ্দ্যেশ্য নিয়ে আসছেন বলেও তিনি জানান। রাজবাবু বলেন, “বাংলাদেশের পর্যটকদের ঢল আগামী ৩ বছর একই হারে থাকবে। পাশাপাশি সিকিমে যাওয়ার অনুমতি সরলীকরণ হওয়ার পর সরকারি এবং বেসরকারি দু’ভাবেই পর্যটন উদ্যোগীদের তরফে ব্যাপক প্রচার করা হয়েছে। তারই সুফল মিলছে বছরের শেষে।” হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “ব্যবসায়িক দিক দিয়ে তো বটেই, বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে এই নতুন দিগন্ত খুলে যাওয়ায় সামাজিক বিকাশেরও পথ খুলেছে। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পর্যটক পরবর্তীতেও সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা নেবে।” দার্জিলিং এর পাশাপাশি এতে লাভবান হয়েছে ভুটান এবং নেপালও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.