রাস্তায় পর্যটকদের গাড়ির লম্বা লাইন। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহ। পাকিস্তানের হামলার প্রত্যাঘাতের বার্তা ভারতের। সীমান্ত এলাকা উত্তরবঙ্গ ও সিকিমেও বাড়ছে আতঙ্ক। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সিকিম-সহ এই রাজ্যের উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে উত্তেজনা। সেই ক্ষেত্রে পর্যটকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর পর্যটকদের গাড়ির লম্বা লাইন। রাস্তায় যানজটও দেখা দিয়েছে বলে খবর।
যুদ্ধ আতঙ্কে ভ্রমণসূচি কাটছাঁট করে ঘরে ফেরার তাগাদা বেড়েছে পর্যটক মহলে। ঠিক তখন মেরামতের জন্য শুক্রবার থেকে বন্ধ সেভক-রংপো ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল। ওই পরিস্থিতিতে এদিন সকাল থেকে পর্যটকদের গাড়ির দীর্ঘ লাইন শিলিগুড়ি-গ্যাংটক সড়ক যোগাযোগের ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে পরিচিত ওই জাতীয় সড়কে। যানজটে নাকাল নিত্যযাত্রীরাও। ডাইভারশন ও সংকীর্ণ লেন দিয়ে ধীরে ধীরে চলাচল করায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যদিও ওই বিষয়ে আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ন্যাশনাল হাইওয়েজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। জানানো হয়, ছ’দিন দু’ঘন্টা কাজের পর এক ঘন্টা ছাড় দেওয়া হবে। কেবল পর্যটকদের সুবিধার জন্য ওই ছাড়ের ব্যবস্থা। কিন্তু ঘরমুখো পর্যটকের গাড়ির সংখ্যা বেশি থাকায় দেখা দিয়েছে প্রবল যানজট।
গ্যাংটকের গাড়ি চালক পাশাং শেরপা বলেন, “মাঝরাতে পর্যটকদের গাড়িতে তুলে রওনা হতে হচ্ছে। অনেকের রাতের ট্রেন ধরার কথা। একটু সমস্যা হলেও প্রত্যেকে ট্রেন ধরতে পারছেন।” তিনি আরও জানান, যে পর্যটকদের উড়ানের টিকিট রয়েছে, তাদের একদিন হাতে নিয়ে শিলিগুড়িতে নামতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য ইকো ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, “কিছুটা রাস্তা খারাপ থাকলেও ট্রেন, বিমান চলাচল স্বাভাবিক আছে। কিন্তু পর্যটকদের একাংশ অযথা ঘাবড়ে তাড়াহুড়ো করছেন। এটা ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন,”সেভক থেকে রংপো পর্যন্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের অংশে মেরামতির কাজ চলছে। সেখানে প্রতি দু’ঘন্টা অন্তর এক ঘন্টা ছাড় থাকবে। ওই সময় কেবল পর্যটকদের গাড়ি যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে। ট্রাক, পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তাই একটু বেশি সময় লাগলেও পর্যটকরা ঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন।”
শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করে ন্যাশনাল হাইওয়েজ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। ততক্ষণে গ্যাংটক থেকে নেমে আসা শিলিগুড়িগামী গাড়ির দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ চলে। নিরুপায় পর্যটকদের গাড়িতে বসে থাকতে হয়। সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ চলার পর এক ঘন্টার জন্য রাস্তা খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু একে সঙ্কীর্ণ রাস্তা। তার উপর কিছু এলাকায় ডাইভারশন থাকায় খুবই ধীরে রংপো থেকে সেভক পর্যন্ত প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে হয়েছে। ফের সকাল ৮টা থেকে কাজ শুরু হয়। চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত। দু’ঘন্টা কাজের পর একঘন্টা ছাড় দেওয়া হয়। রাস্তায় সেই একই ভিড়, হুড়োহুড়ি। এভাবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ চলে। রাস্তায় যানজটে আটকে নাজেহাল পর্যটকরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.