নব্যেন্দু হাজরা: একেবারে মেট্রোর ধাঁচে এবার ঝাঁ-চকচকে হতে চলেছে জল-পরিবহণ। সাজবে গঙ্গাপারের ফেরিঘাট। জলপথে আনা হবে গতিও। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় গঙ্গাবক্ষে নামতে চলেছে অত্যাধুনিক ১৫ বৈদ্য়ুতিক জলযান। আগামী বছরের মধ্যেই এগুলো নামানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বাতানুকূল এই ভেসেলগুলোতে থাকছে অত্যাধুনিক সিট, বায়োটয়লেট ছাড়াও একাধিক সুযোগ-সুবিধা। শহর-শহরতলির মধ্যে এই ভেসেলগুলো গঙ্গা পারাপার করবে। ২০০ থেকে ২৫০ জন যাত্রী যাতায়াতের বড় ভেসেলগুলো চলবে শহরে আর শহরতলির মধ্যে চলা ভেসেলগুলোতে ১০০ জন মতো উঠতে পারবেন।
পাশাপাশি কোচি শিপ ইয়ার্ডের ধাঁচে রাজ্য়ে তিনটি ইয়ার্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চারটি করে জেটিকে নিয়ে একেকটি ইয়ার্ড হবে। মিলেনিয়াম পার্ক, হাওড়া এবং চন্দননগরে এই শিপ ইয়ার্ড তৈরির কথাবার্তা এগিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। নবান্নর কর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের বৈঠকও হয়েছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ফেরিঘাটগুলোতে চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে বলেই জানা গিয়েছে।
সড়কের উপর চাপ কমাতে জলপরিবহণকে ঢেলে সাজাচ্ছে রাজ্য সরকার। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় একাধিক পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। ই-ভেসেল নামানো তারই একটি অঙ্গ। জানা গিয়েছে অত্যাধুনিকমানের এই ভেসেলগুলোর মধে্য ১৩টি গঙ্গা পারাপার করবে। আর দু’টি আনা হচ্ছে ক্রুজ। সেগুলোতে পর্যটকদের পৃথক ঘর থেকে শুরু করে ডাইনিং রুম, টয়লেট যাবতীয় বন্দোব্যস্ত থাকছে। একটি ক্রুজ পর্যটকদের ‘ওয়ান ডে’ টুর করাবে। আরেকটি ‘ওভারনাইট’ টুর করাবে। ৭০ থেকে ৭৫ জন যাত্রী তাতে চড়তে পারবেন। এই ক্রুজগুলো পর্যটন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলেই নবান্নসূত্রে খবর। চলতি সপ্তাহেই বিষয়গুলো নিয়ে ই-ভেসেলের নির্মাণকারী সংস্থা, বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের। সেখানে কোন সংস্থাকে এই বৈদু্যতিক ভেসেল চালুর বরাত দেওয়া হবে, তা ঠিক হতে পারে। দফতরের এক কর্তার কথায়, পুরনো হয়ে যাওয়া ডিজেলচালিত কিছু ভেসেল বসিয়ে দেওয়া হতে পারে। সেই জায়গায় এই নতুন ই ভেসেল নামানো হবে।
দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বৈদ্যুতিক ভেসেল নামলে জলপথে দূষণের মাত্রা অনেকটাই কম হবে। একই সঙ্গে আসবে গতিও। কারণ, নতুন ভেসেলগুলোর গতিবেগ এখন যেগুলো চলে তার থেকে প্রায় দ্বিগুণ। ক্রুজের গতিবেগ আরও অনেকটাই বেশি। তবে এই অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও এগুলো বাতানুকূল হলেও খুব বেশি বাড়তি ভাড়া যাতে না দিতে হয় যাত্রীদের সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এখন গঙ্গাপার করতে যাত্রীদের লাগে ন্যূনতম ৬ টাকা। সাধারণ মধ্যবিত্তের কথা মাথায় রেখেই নয়া বৈদ্যুতিক ভেসেলর ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, যে তিনটি শিপ ইয়ার্ড হবে সেগুলো সম্পূর্ণ বাতানুকূল। সেখানেই এই ই-ভেসেলগুলো রাখা হবে। করা হবে রক্ষণাবেক্ষণ। উল্লেখ্য, গত মাস ছয়েকের মধ্যে ২২টি নতুন ভেসেল নামানো হয়েছে। সেগুলো এখন হাওড়া ও শহরতলির ঘাট পারাপার করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.