সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যদিদং হৃদয়ং মম/তদস্তু হৃদয়ং তব’, সাত পাকে বাঁধা পড়তে গিয়ে এই মন্ত্র তো উচ্চারণ করেছেন অনেকেই। এই হৃদয়ে হৃদয়ে মেলবন্ধনের পরেও তো সমাজে আলাদা আলাদা ব্যক্তির পৃথক গুরুত্ব থাকে। সেখানে থাকে সমানাধিকারের কথা। অথচ আজকের দিনেও পরিবারে গৃহবধূরা কি গৃহকর্তার মতো গুরুত্ব পান? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উত্তরটা ‘না’ হয়। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে দেখলে সামান্য হলেও স্ত্রীর তুলনায় স্বামীর গুরুত্ব কম। আর সেই বিভেদ মেটাতেই অভিনব ভাবনা গুয়াহাটির (Guwahati) আইনজীবী যুগলের। আইনের মানদণ্ডই হোক আর সমাজের দাঁড়িপাল্লাই হোক, নিজেদের বিয়ের কার্ডে এই ছবিই আর পাঁচটা আমন্ত্রণপত্র থেকে আলাদা করে দিয়েছে। আপাতত এই অসমীয়া যুগলের বিয়ের কার্ড ভাইরাল (Viral)। রবিবারই অজয় আর পূজা সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন।
যে কার্ডের (Invitation card) ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, তার সবটাই আইনি পরিভাষায় মোড়া। কার্ডের বাঁ দিকে নিজেদের বিয়ের কথা ঘোষণা করেছে অসমের (Assam) পাত্র অজয় শর্মা। সেখানে একটি তুলাদণ্ডের ছবি, যা সাধারণত আদালতে দেখা যায়। তুলাদণ্ডের দুই পাল্লায় নাম লেখা পাত্র অজয় এবং পাত্রী পূজার। এই পাতাতেই বিয়ের দিনক্ষণ, স্থান সব তথ্য দেওয়া। আর ডানদিকের বয়ান সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে ‘হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট’-এর নানা ধারা উল্লেখ করে লেখা, সংবিধান মেনে তাঁরা বিবাহন্ধনে (Marriage) আবদ্ধ হচ্ছেন।
এখানে বিবাহ সম্পর্কিত আইনি ব্যাখ্যাও রয়েছে এই কার্ডে। তাতে লেখা – সংবিধানের ২১ নং ধারা অনুযায়ী বিবাহ করতে পারে দুই প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ। আমরা সেই মৌলিক অধিকার মেনে বিয়ে করছি। আপনাদের আমন্ত্রণ করছি সংবিধানের ১৯ (বি) ধারায়। যে ধারা অনুযায়ী, অস্ত্রশস্ত্র ছাড়া শান্তি বজায় রেখে নিমন্ত্রণ রক্ষা করা। তাই বিনীত আবেদন, আপনারা সকলে আমাদের আশীর্বাদ করুন।” বিয়ের কার্ডে এত আইনি ভাষায় লেখা বয়ান সত্যিই অনন্য, এর আগে কেউ এমনটা দেখেননি।
নেটদুনিয়ায় মুহূর্তেই ভাইরাল সেই কার্ড। কেউ কেউ বিস্মিত এই বয়ান দেখে। কেউ আবার বলছেন, আইনজীবী বলেই নিজেদের সৃষ্টিশীলতায় এত আইনি ছোঁয়া। নেটিজেনদের মত যা-ই হোক, বিষয়টি যে একেবারে নজর কেড়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.