দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সাঁতার জানেন না। মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে পড়ে নোনা জলে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে এল। ভেবেছিলেন, আর বাঁচবেন না। কিন্তু ‘রাখে হরি মারে কে!’ অচৈতন্য অবস্থায় নদীতেই পাঁচ ঘণ্টা ভেসে রইলেন গান্ধারী মণ্ডল নামে বছর পঞ্চান্নর ওই প্রৌঢ়া। পরে তাঁকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রবিবার এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাবাড়ি এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদামতলা এলাকার হালদারপাড়ার বাসিন্দা গান্ধারীদেবী অন্যান্য দিনের মতো রবিবার সকালেও মাছ ধরতে দক্ষিণ রেদোখালি সংলগ্ন মাতলা নদীতে গিয়েছিলেন। মাছ ধরার সময় হঠাৎ পা পিছলে যায়। মাতলায় তখন ভরা জোয়ার। নদীতে পড়ে ছটফট করতে থাকেন। আশপাশে কেউ না থাকায় মেলেনি সাহায্য। সাঁতার না জানায় হাবুডুবু খেতে থাকেন লবণাক্ত জলে। একসময় অচৈতন্য হয়ে পড়েন।
কিন্তু প্রৌঢ়া নদীতে ভেসেই ছিলেন।
এভাবেই কেটে যায় ঘণ্টা পাঁচেক। পরে মৎস্যজীবীদের একটি নৌকার নজরে আসেন গান্ধারীদেবী। কিন্তু নদীতে এমনভাবে ভেসে থাকতে দেখে মৎস্যজীবীদের সেটি ‘মৃতদেহ’ বলে সন্দেহ হয়। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় গোলাবাড়ি গ্রামে খবর দেন। খবর যায় গোলাবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পেও। ওই মৎস্যজীবী দল, কয়েকশো গ্রামবাসী, গোলাবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের এসআই শুভঙ্কর করণ, সিভিক ভলান্টিয়ার শান্তনু পাটারি, রাজু পাত্ররা মাতলা নদীর তীরে ভিড় জমান।
কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ধীবরদের নিয়ে পুলিশ কর্মীরা নৌকায় মাতলা নদীতে ভাসমান প্রৌঢ়ার দেহের কাছে পৌঁছন। এবার তাঁদের অবাক হওয়ার পালা। যাঁকে মৃতদেহ ভাবা হচ্ছিল, সেই নৌকায় বসে কথা বলতে শুরু করে। জানা যায়, প্রায় পাঁচ ঘণ্টা মাতলা নদীর লবণাক্ত জলে অচৈতন্য হয়ে ভাসছিলেন প্রৌঢ়া। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় স্থানীয় গোলাবাড়ি খেয়াঘাটে। সেখানেই গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসাও শুরু হয়। পরে গোলাবাড়ি ক্যাম্পের পুলিশের তৎপরতায় গান্ধারীদেবীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.