সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর জীবন ছিল দুর্বিষহ। কেননা মুখের উপরে চোখ কিংবা কান থাকলেও ছিল না নাক! ফলে অন্য কারও পক্ষে যা সহজ ও স্বাভাবিক সেটাই করে ওঠা তাঁর কাছে ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জের। তাই শেষপর্যন্ত আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে চেয়েছিলেন। ভাগ্যিস ব্যর্থ হয়েছিল সেই চেষ্টা। কেননা ‘ফেস ট্রান্সপ্ল্যান্ট’ করিয়ে এখন তিনি পেয়ে গিয়েছেন কাঙ্ক্ষিত নাক!
মার্কিন এই ব্যক্তির নাম ডেরেক ফ্যাফ। মিচিগানের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। নাক না থাকার ফলে কঠিন খাদ্য যেমন খেতে পারতেন না। তেমনই বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে সহজ আড্ডাও ছিল বিশ বাঁও জলে। এমনকী, চশমাও পরতে পারতেন না। ১৯ বছর বয়সে কলেজে পড়াকালীন বন্দুক হাতে তুলে নিয়েছিলেন মানুষটি। তাঁর মায়ের কথায়, ”ও যে বেঁচে গিয়েছিল এটাই অলৌকিক।” গত ১০ বছরে ৫৮টি ফেসিয়াল সার্জারির সম্মুখীন হলেও কোনওটিই ফলপ্রসূ হয়নি। কিন্তু শেষপর্যন্ত দিশা দেখান এক চিকিৎসক। ডেরেকের শেষ অস্ত্রোপচারের পর তিনি তাঁর বাবা-মাকে পরিষ্কার জানান, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই পথ। আর তা হল ‘ফেসিয়াল ট্রান্সপ্ল্যান্ট’।
শেষপর্যন্ত তাই হয়েছে। ডেরেকের মুখের ৮৫ শতাংশই নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চোখের উপর ও নিচের পাতা, চোয়াল, দাঁত, নাক, গালের অংশ। আর এই নির্মাণের ফলেই তাঁর মুখে এখন দিব্যি শোভা পাচ্ছে একটি নাক। রচেস্টারের এক মায়ো ক্লিনিকের এই অস্ত্রোপচারই দূর করেছে তাঁর জীবনের জটিলতা। সারা পৃথিবীতে গত ২০ বছরে সবশুদ্ধ পঞ্চাশটির সামান্য বেশি সফল ‘ফেসিয়াল ট্রান্সপ্ল্যান্ট’ হয়েছে। ডেরেক সেই বিরল সৌভাগ্যবানদেরই একজন। একসময় জীবন শেষ করে ফেলতে চাইলেও এখন তিনি নতুন করে ফিরে পেয়েছেন বেঁচে থাকার আনন্দ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.