সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আপনি কখনও দরজা না লাগিয়ে বাড়ির বাইরে গিয়েছেন? যাননি তো! যাবেনই বা কী করে? আপনি তো আর মহারাষ্ট্রের শনি শিঙ্গাপুর জেলার বাসিন্দা নন। আহমেদনগর জেলার এই গ্রামের বাসিন্দারা বাড়িতে দরজা লাগান না। তাতেও বাড়ির ভিতরের টাকা-পয়সা, গয়না, আনাজপাতি কিচ্ছু চুরি হয় না। অবাক হচ্ছেন? অবাক করার মতো তথ্য হলেও, এটাই সত্যি।
এখানকার মানুষ বিশ্বাস করেন শনিদেবতা তাদের যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস যদি কেউ চুরি করেন তাহলে তিনি শনিদেবতার কোপে পড়বেন। কেউ যদি কোনওরকম অপরাধ করার সাহস দেখায় সারাজীবন তাঁকে ভুগতে হবে। এমনকী দৃষ্টিশক্তিও হারাতে হবে। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস অবশ্য একদিনে তৈরি হয়নি। শোনা যায়, ৩০০ বছর আগে গ্রামের প্রান্তে পানাস্নালা নদীতে একটা কালো পাথর ভেসে এসেছিল। এক গ্রামবাসী তাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করার পরই পাথর থেকে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করেছিল। সেই রাতেই গ্রামের মুখিয়া(প্রধান) নাকি স্বপ্নাদেশে জানতে পারেন ওই পাথরটি স্বয়ং শনিদেবতা। গ্রহরাজ তাঁকে নির্দেশ দেন, ওই পাথরটি গ্রামে প্রতিষ্ঠা করার। এবং তাঁর চারিদিকে যেন কোনও ছাদ বা দেওয়াল না থাকে, যাতে শনিদেব গোটা গ্রামকে নিজের নজরে রাখতে পারেন। গোটা গ্রামকে সমস্তরকম বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। তার পরদিনই মুখিয়া গ্রামে শনিদেবের পাথর প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকেই গ্রামে কেউ দরজা লাগায় না।
গ্রামবাসীর বিশ্বাস এতটাই দৃঢ় যে, এই গ্রামের ব্যাংকেও কোনও দরজা না লাগানোর দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ব্যাংকে দরজা লাগানো হলেও তাতে তালা লাগানো হয় না। যদিও, ইউকো ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশ্য তালা না লাগালেও ব্যাংকের সব টাকাকড়ি পাশের গ্রামের শাখায় নিয়ে চলে যায়। গ্রামে একটি থানা আছে, তাতেও কোনও দরজা নেই। মজার কথা হল, আজ অবধি এই থানায় একটিও অভিযোগ দায়ের হয়নি এই গ্রাম থেকে। যা অভিযোগ এসেছে পাশের গ্রাম থেকে। গ্রামবাসীরা পাবলিক টয়লেটেও দরজা লাগান না। শুধুমাত্র পর্দাতেই চলে কাজ। শোনা যায়, বহুকাল আগে নাকি এই গ্রামের এক ব্যক্তি বাড়িতে দরজা লাগিয়েছিলেন। পরদিনই দুর্ঘটনা ঘটে তাঁর। আপাতত, এই গ্রামটি পর্যটনস্থল হিসেবে বিখ্যাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.