সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রের টেবিলে পড়ে অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, লেখার বোর্ড। অথচ নেই পরীক্ষার্থী! শনিবার মাধ্যমিকের ইংরাজি পরীক্ষা দিয়ে এসব ফেলেই কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকার হাত ধরে উধাও পরীক্ষার্থী। দিনভর এনিয়ে হইহই ব্যাপার পুরুলিয়ার (Purulia) আড়শায়। ছাত্রের বাবা পুরুলিয়া সদর থানায় অপহরণের (Kidnap) অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর খোঁজে নেমেছে পুলিশ।
পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের পাতুয়ারা গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস মাঝি। কান্টাডি শিক্ষাসত্র হাই স্কুলের ওই মাধ্যমিক (Madhyamik 2024) পরীক্ষার্থী সে। প্রথম দিনের পরীক্ষার মতোই শনিবারও ইংরাজি পরীক্ষা দিতে বাড়ি থেকে পুরুলিয়া শহরে আসে দেবাশিস। পরীক্ষাকেন্দ্র চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিসিটিভি ফুটেজে (CCTV Footage) তা ধরাও পড়ে। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তার চলে যাওয়ার কোনও ছবি নেই। তাহলে কি কোনও চোরাগোপ্তা পথে অর্থাৎ দেওয়াল টপকে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পালিয়ে যায়? এই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর দিতে পারেনি ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
দেবাশিসের বাবা সীতারাম মাঝি অভিযোগ, “আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। এই বিষয়টি পুরুলিয়া সদর থানায় অভিযোগ করেছি। আমার ১৭ বছরের ছেলের সঙ্গে ২৩ বছরের এক কলেজ পড়ুয়ার মেয়ের প্রেম ছিল ৬-৭ মাস ধরে। ওই প্রেমিকা ছেলেকে নিয়ে গিয়েছে। তার বাড়ি পুরুলিয়া শহরের কেতকা এলাকায়।” পুরুলিয়া সদর থানা একটি অপহরণের মামলা রুজু করেন সীতারাম মাঝি। এর প্রেক্ষিতে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায়। এই ধরনের ঘটনায় সাধারণভাবে নাবালিকাকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রেমের সম্পর্কের জন্য নাবালককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শহরের ওই একই পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া রাজু কর্মকার বলেন, “আমাদের রুমে একজন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। পরীক্ষার টেবিলে তার অ্যাডমিট কার্ড রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষা দেওয়ার বোর্ড পড়েছিল। আর কিছু বলতে পারব না।”
পুরুলিয়ার মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক ড. সোমনাথ কুইরি বলেন, “চিত্তরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এই রিপোর্ট আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।” উধাও হয়ে যাওয়া মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজ পড়ুয়া ওই প্রেমিকা জেলার একটি মহাবিদ্যালয়ে পড়ে। টিউশন পড়ার জন্য ওই পরীক্ষার্থী ছেলেটি পুরুলিয়া শহরে মেসে থাকত। তার জেঠতুতো দাদার বাড়ি ছিলো শহরের কেতকায়। সেখানেই বাড়ি ওই কলেজ ছাত্রীর। দাদার বাড়িতে গিয়েই তাদের প্রেম হয় এবং এই পরিণতি!
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.