সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: সৌন্দর্য তো প্রশংসার, সমাদরের, নান্দনিক চর্চার। কিন্তু কখনও কখনও সৌন্দর্য যে শত্রু হয়ে ওঠে! যার নিষ্ঠুর পরিণতি দেখা গেল শান্তিপুরে। সুন্দরী স্ত্রীর মুখশ্রীতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় তাঁর নাকটি। আর তাতেই প্রেমে পড়তে পারে পরপুরুষ, স্রেফ এই সন্দেহে স্ত্রীর নাক কামড়ে আহত করল স্বামী! মদ্যপ অবস্থায় রাতের অন্ধকারে এই হামলার পর আহত স্ত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। চিকিৎসার পর সামান্য সুস্থ হয়ে স্ত্রী শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতে স্বামীকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নদিয়ার শান্তিপুর থানার অন্তর্গত ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাপন শেখ। তাঁর সঙ্গে ন বছর আগে প্রেম করে বিয়ে হয় মধু খাতুনের। বাপন-মধুর আট বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এমনিতে সংসার ভালোই চলছিল তাঁদের। কিন্তু স্ত্রীর সৌন্দর্য নিয়ে মাঝেমধ্যেই স্বামী খুঁতখুঁত করতেন। মধুকে বলতেন, তাঁর মুখটা খুব সুন্দর। বিশেষ করে নাকটা খুব ভালো লাগে বাপনের। মদ্যপ অবস্থায় বাপন এও বলতেন, ”একদিন নাকটা কামড়ে দেব!” কিন্তু তা যে বাস্তবে তিনি ঘটিয়ে ফেলবেন, তা তো কেউ ভাবেইনি।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে গেল সেই নৃশংস ঘটনাই। রাত তিনটে নাগাদ আচমকাই নাকে প্রবল যন্ত্রণা অনুভব করেন মধু। ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। বুঝতে পারেন, স্বামী তাঁর নাক কামড়ে ধরেছে। স্বামীকে বাধা দিতে গেলে মধুর আঙুলেও কামড়ানো হয় বলে অভিযোগ। কোনওক্রমে স্বামীর হামলা থেকে বেঁচে বাড়ির বাইরে চলে যান মধু। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নাকের কামড়ানো অংশে অস্ত্রোপচারের পর ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে।
সামান্য সুস্থ হতেই মধু থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের কাছে তিনি আরও জানান, বাপন শেখ প্রায়ই তাঁর নাকের প্রশংসা করতেন। বলতেন, ”তোর মুখটা এত সুন্দর কেন? নাকটা আরও বেশি সুন্দর! আমি নাকটা কামড়ে খেয়ে নেব।” তার মনে সন্দেহ ছিল, সুন্দরী স্ত্রীর মুখ দেখে অন্য কেউ প্রেমে পড়ে যেতে পারে। তাই মাঝে একবার অ্যাসিড হামলারও হুমকি দিয়েছিল স্ত্রীকে। তবে প্রশংসার ছলে আসলে যে হিংসার ছক কষছিল, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি স্ত্রী মধু। কিন্তু ঘটে গেল দুঃস্বপ্নের অতীত সেই ঘটনাই। স্ত্রীর সৌন্দর্য নষ্ট করতে তাঁর নাক কামড়ে আপাতত শ্রীঘরে স্বামী বাপন শেখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.