অর্ক দে, বর্ধমান: রবি ঠাকুরের ‘বনের পাখি’ ও ‘খাঁচার পাখি’র দ্বন্দ্ব সকলেরই জানা। কিন্তু মানুষের ভালবাসা পেলে একজন বন্য পাখিও ঘরের সদস্য হয়ে উঠতে পারে, বর্ধমানের মিষ্টুর ঘটনা তারই প্রমাণ। মাস খানেক আগে বাড়ি লাগোয়া জঙ্গল থেকে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকা একটি পাখির ছানাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন। বাড়ির সকালের আদর-যত্নে সুস্থ হয়ে এখন সে বাড়ির একজন সদস্য হয়ে উঠেছে। খাঁচাবন্দি নয়, বাড়ির সদস্যের মতো খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ায় সে। আর তার আগমনের একমাস পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে প্রথা ভেঙে একমাস পর ধুমধাম করে সেই টিয়া পাখির জন্মদিন (Birthday) পালন করলেন বাড়ির লোকজন।
পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) কুড়মুন ২ পঞ্চায়েতের সোনাপোলাশী গ্রামে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারই এখন ঠিকানা উদ্ধার হওয়া টিয়া পাখির ছানাটির। বাড়ির সদস্যরা আদর করে তার পোশাকি নাম দিয়েছেন – মিষ্টু। এক ডাকেই এখন সাড়া দেয় সে। বাড়ির সদস্যদের সঙ্গেই সারাদিন কেটে যায় তার। খাঁচায় বন্দি বা বাঁধা অবস্থায় নয়, পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গেই ঘোরাফেরা করে মিষ্টু।
এই পরিবারের কোনও সদস্যের জন্মদিন সেভাবে পালন করার চল নেই। কিন্তু, রবিবার দেখা গেল বাড়ির বিশেষ সদস্য টিয়া পাখির (Parrot)জন্য সেই নিয়ম বদল করেই রীতিমতো অনুষ্ঠান করে জন্মদিন পালন করা হল। যথারীতি বেলুন দিয়ে ঘর সাজিয়ে, কেক কেটে সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিল মিষ্টু। প্রায় ৫০ জন অতিথিকে আপ্যায়ণ করে খাওয়ানো হল। মেনু রীতিমতো আকর্ষণীয়। ভাত,ডাল,পটল চিংড়ি, পোস্ত, খাসির মাংস, চাটনি,পায়েস,পাঁপড়, দই, মিষ্টি। নিমন্ত্রিতদের মাঝে বসে খেল মিষ্টুও।
পরিবারের সদস্য শান্তিময়ী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ”এক মাস আগে বাড়ির পাশে জঙ্গলে ওকে পড়ে থাকতে দেখি। তখন ঠিকমতো চোখ ফোটেনি। মাটিতে পড়ে ছটফট করছিল। বন্য জীবজন্তু খেয়ে নিতে পারে ভেবে বাড়িতে নিয়ে আসি। তখন থেকেই বাড়ির সকলের সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। ওর বাড়ি আসা একমাস পূর্ণ হওয়ায় আজ মিষ্টুর জন্মদিন পালন করা হল।”
কুড়মুনের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পাখির জন্মদিন পালনের এই আয়োজন নজর করেছে সকলের। পোষ্যের প্রতি ভালোবাসায় বাড়ির সদস্যদের অনুষ্ঠান পালনে বিন্দুমাত্র খামতি নেই। আদর,যত্ন খাওয়াদাওয়া পেয়ে বনের পাখি মিষ্টু এখন পরিবারের একজন।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.