সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রক্তাক্ত ছিন্নভিন্ন, কাটা একটা হাত। বাহুর উপরের অংশটা নেই। আর নিচের দিকে যতটুকু পড়ে আছে সেটুকুও আপাত চামড়াহীন, হাড়-মাংস বের করা! এতটাই বীভৎস যে দেখলে চমকে উঠতে হয়! বেশিক্ষণ ওইদিকে তাকিয়ে থাকাই দায় তো কার হাত, সেটা শনাক্ত করা রীতিমতো দুরূহ ব্যাপার! কিন্তু ওই যে! অনামিকায় জ্বলজ্বল করছে বিয়ের আংটিখানা। ব্যস! ওইটা দেখেই সাঁতার করতে নেমে, হাঙরের শিকার হওয়া স্বামীকে শনাক্ত করলেন স্ত্রী। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রিইউনিয়ন আইল্যান্ডে। ভারত মহাসাগরের এই অংশটি ফ্রান্সের অন্তর্ভুক্ত।
গত ২ নভেম্বর থেকেই খোঁজ মিলছিল না এডিনবার্গের বাসিন্দা, রিচার্ড মার্টিন টারনারের। ব্রিটেনের এডিনবার্গের বাসিন্দা, রিচার্ড ওই দ্বীপপুঞ্জে স্ত্রীর চল্লিশতম জন্মদিন পালন করতে গিয়েছিলেন। শনিবার তিনি সাঁতার কাটতে নামেন দ্বীপেরই হারমিটেজ লেগুনে। ওই এলাকার অন্যয় হ্রদগুলিতে হাঙর থাকলেও হারমিটেজে হাঙরের দেখা মেলে না বলেই জনশ্রুতি। কারণ, প্রায় ছ’ ফুট গভীর ওই হ্রদের অতলে রয়েছে ঘন প্রবাল প্রাচীর। যা হাঙরদের সেখানে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে বলেই সাধারণভাবে বিশ্বাস। স্বাভাবিকভাবেই তাই সাঁতারে বিশেষ করে, ডুবসাঁতারে বরাবরের দক্ষ বছর চুয়াল্লিশের রিচার্ডও স্থানীয়দের সেই বিশ্বাসে ভর করেই নেমেছিলেন হ্রদের জলে। আর উঠে আসেননি। এই খবর জানাজানি হওয়ার পর রিচার্ডের সন্ধানে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। হ্রদেও তল্লাশি চলে। অথচ অভাবনীয়ভাবে সেখান থেকে ধরা পড়ে চার চারটি হাঙর। এরই মধ্যে একটির পেট থেকে মেলে মানুষের ছিন্নভিন্ন হাতের দেহাংশ।
ঘাতক সেই ‘টাইগার শার্ক’-এর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১৩ ফুট। তবে ছিন্নভিন্ন হাতটি দেখে ঠাহর করতে না পারলেও আঙুলে জ্বলজ্বল করতে থাকা বিয়ের আংটিখানি দেখে শেষপর্যন্ত স্বামীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন স্ত্রী। হাঙরের পেট থেকে উদ্ধার করা দেহাংশের ডিএনএ পরীক্ষাও হয়। তাতেও সবুজ সংকেত মেলে যে, ওই দেহাংশ আদপে টার্নারেরই। ব্রিটেনের এক দৈনিকের দাবি, টার্নারের উপর সব হাঙরগুলিই চড়াও হয়েছিল কি না, তা জানতে ধরা পড়া, বাকি হাঙরগুলিরও পরীক্ষা করা হবে। ঘটনায় ব্রিটেনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.