সুকুমার সরকার, ঢাকা: গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের সুরে অংশুমান রায় গেয়েছিলেন,‘দাদা পায়ে পড়ি রে মেলা থেকে বউ এনে দে।’ সত্যিই মেলায় গেলে বউ পাওয়া যায়? বাংলাদেশে এমন কোনও মেলা আছে বলে এখনও জানা যায়নি। তবে ‘বউ মেলা’ যে আছে, তার খবর জানা গিয়েছে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে। সেখান প্রায় একশো বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। প্রত্যেক বছর জমজমাট এই মেলায় থাকে উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু সেখানে প্রবেশের অনুমতি নেই পুরুষদের। দোকানে দোকানে ঘুরে পছন্দের জিনিসপত্র কিনছেন শুধু কিশোরী-তরুণী-বধূরা।
সনাতন ধর্মালম্বীদের লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে প্রতিবছর পরদিন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার পুজোমণ্ডপ চত্বরে দিনব্যাপী এই বউ মেলার আয়োজন করা হয়। পরিবারের নারী সদস্যদের নিয়ে মেলায় আসেন পরিবারের কর্তা। মেলার প্রবেশদ্বারের কাছে অপেক্ষা করেন তিনি। মেলায় আসা চম্পা রানী নামে তরুণী বলেন, “নতুন বিয়ে হয়েছে। বরকে নিয়ে বউ মেলায় এসেছি। কিন্তু মেলায় পুরুষের প্রবেশ নিষেধ থাকায় বরকে মেলার বাইরে ছেড়ে আসতে হয়েছে। মেলায় এসে খুব ভালো লেগেছে।” বউ মেলার বাইরে গেটে দাঁড়িয়ে থাকা বাপি দাস, রাহুল গুপ্ত আকাশ-সহ অনেকে বলেন, মেলাতে পুরুষের প্রবেশ নিষেধ জানার পরও শুধু নিজেদের বউ, বাচ্চাদের আনন্দের জন্য তাদের নিয়ে মেলায় আসতে হয়। বউ-বাচ্চারা মেলায় ভিতরে ঘোরাঘুরি করেছে। কেনাকাটা করেছে।
মেলার আয়োজক সুজাপুর সার্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অশেষ রঞ্জন দাস বলেন, মেলাটি তৎকালীন জমিদার বিমল বাবু শুরু করেন। জমিদারবাবু সপরিবারে ভারতে চলে গেলেও ঐতিহ্যবাহী বউমেলা সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর হয়ে আসছে। মেলার আগের দিন শহরজুড়ে মাইকিং-সহ বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হয়। মেলার দিন সকাল থেকেই শুরু হয় মাঠ চত্বরে সাজসজ্জা। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পর থেকেই আসতে শুরু করেন মেলার ক্রেতা ও শিশু-কিশোরী-তরুণী-সহ সব বয়সী মহিলারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.