প্রতীকী ছবি
ফিক্সড ইনকাম তথা ডেট নিয়ে এর আগেও বহু আলোচনা হয়েছে। পরবর্তীতেও হবে। কিন্তু লগ্নির পথ সুগম রাখতে ডেট ফান্ড নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান থাকাটা জরুরি। তাছাড়াও ইনভেস্টরকে অবশ্যই নিজের রিস্ক প্রোফাইল বুঝে নিয়ে এগোতে হবে। ব্যাখ্যা করলেন নীলাঞ্জন দে
এখন ইক্যুইটিতে আর বড় লগ্নি করব না, অন্য কোনও অ্যাসেট ক্লাসের দিকে মন দেব–এই চিন্তা এখন অনেকেই করছেন। তাই আজকের আলোচনা, এই নতুন ধ্যান ধারণার নিরিখে ফিক্সড ইনকাম তথা ডেট নিয়ে। প্রতিবেদনে ফিক্সড ডিপোজিট নিয়ে আর উল্লেখ করছি না, তার বদলে বন্ড-ডেবেঞ্চার-গিল্টের সমন্বয়ে গঠিত ডেট ফান্ড নিয়ে বলতে চাই। শুরু করার আগে কয়েকটি পয়েন্ট –
১। ডেট ফান্ড বহু ধরনের হয়। সেবির হিসাব অনুযায়ী এক ডজনের বেশি ক্যাটেগরি আছে। অতি স্বল্প মেয়াদী থেকে দীর্ঘমেয়াদী, অনেক গোত্রের লগ্নি এখানে করা যেতে পারে। তবে ইনভেস্টরকে অবশ্যই নিজের রিস্ক প্রোফাইল বুঝে নিতে হবে।
২। বিভিন্ন ঋণপত্রের বিভিন্ন ক্রেডিট রেটিং। ভাল রেটিং আছে (অর্থাৎ AAA, সর্বাধিক রেটিং) এমন ঋণপত্রের রিস্ক কম তুলনামূলকভাবে। নিজের ডেট ফান্ডের রেটিং প্রোফাইল কী, জেনে নেবেন।
৩। ফান্ডের পোর্টফোলিওর খবর নিন। সাধারণত যা থাকতে পারে তা নির্ভর করবে ফান্ডের ধরন-ধারনের উপর। লিকুইড ফান্ডের চরিত্র এবং প্রয়োগ এক ধরনের আবার কর্পোরেট বন্ড ফান্ডের শর্তগুলি অন্য ধরনের। টাইম হরাইজন বুঝে নিয়ে লগ্নির কথা ভাববেন।
৪। ফান্ডের কর্তৃপক্ষ নিয়ম করে সবকিছু ফ্যাক্টশিটে জানিয়ে দেন। রেটিংয়ের তথ্য, এক্সপেন্স রেশিও, সবই জানতে পারবেন। আলাদাভাবে ফান্ডের রিস্ক ক্লাস ম্যাট্রিক্স দেখে নিতে ভুলবেন না।
৫। আপনার ক্ষেত্রে দুই প্রধান রিস্ক : সুদ-জনিত ইন্টারেস্ট রেট রিস্ক, এবং ক্রেডিট রিস্ক। যদি ডিফল্ট হয়, সুদ বা প্রিন্সিপাল দিতে দেরি হয় (অথবা দেওয়া যখন সম্ভব হয় না) তখন ঝুঁকি বাড়ে। ক্রেডিট রিস্ক নিয়ে ইদানিং অনেক সতর্কতা জারি হয়েছে। আগ্রহী লগ্নিকারী জেনে নেবেন।
ডেট ভ্যালুয়েশন এবং ইন্টারেস্ট রেটের বিপরীতমুখী সম্পর্ক
ইনভার্স রিলেশনশিপ। ডেটের ভ্যালুয়েশন এবং সুদের হারের মধ্যে এই বিপরীতমুখী সম্পর্ক সব বোঝা দরকার।
এর ফলে যা হয় : (ক) যখন সুদের হার বাড়ে, তখন বরোয়িং কস্টও বাড়তে থাকে। এবং চালু ডেট ইনস্ট্রুমেন্টের ভ্যালু কমে আসে।
(খ) উল্টোটা – মানে, সুদের হার যখন কমে তখন ডেটের ভ্যালু বাড়ে।
তার মানে ঋণপত্রের দাম এবং ইন্টারেস্ট রেট, এই দুইয়ের সম্পর্ক “ইনভার্স”। সুদের হার বাড়ে যখন তখন নতুন লোনের জন্য বেশি সুদ ধার্য হয়। নতুন বন্ডের ইল্ড তখন বেশি। তাই চালু (পুরনো) বন্ডের ইল্ড তুলনায় কম। অতএব সেক্ষেত্রে দামও পড়ে যায়। এবার মনে করুন সুদের হার কমে আসছে, এবং নতুন লোনের জন্য কম সুদ-জনিত পেমেন্ট করতে হবে। নতুন বন্ডে তাই কম ইন্ড। তার তুলনায় পুরনো বন্ডে অপেক্ষাকৃত বেশি ইল্ড। তাই লগ্নিকারীর কাছে চাহিদা বেশি। চাহিদা বেশি হলে দামও বাড়বে। আবার সেই ইনভার্স রিলেশনশিপ প্রত্যক্ষ করা যাবে। উল্লেখ্য, একাধিক কারণে সুদের হারে তারতম্য ঘটতে পারে। ইনফ্লেশন (মুদ্রাস্ফীতি) তথা সেই সংক্রান্ত নীতি (যা ব্যাঙ্ক রেগুলেটর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া রূপায়ণ করে) এখানে মূল নির্ধারক হিসাবে কাজ করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.