Advertisement
Advertisement

ট্রফি জয়ের পরের মরশুমেই প্লে অফে উঠতে ব্যর্থ, কেন হতাশা নাইটদের? রইল ৭ কারণ

নিলামে ব্যর্থতা থেকে অহেতুক বিতর্ক, একাধিক ফ্যাক্টরে ব্যর্থ নাইটরা।

গত মরশুমে কেকেআর যখন চ্যাম্পিয়ন হল, তখন দলটাকে অপ্রতিরোধ্য মনে হয়েছিল। দু-একটা ম্যাচ বাদ দিলে অধিকাংশ ম্যাচে কোনওরকম চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হয়নি নাইটদের। অথচ এক মরশুম পরেই প্লেঅফে খেলার সুযোগটুকু অর্জন করতে পারল না নাইটরা। বস্তুত এই মরশুমে কেকেআরকে দেখে একবারও মনে হয়নি দলটা নিজেদের ট্রফি ধরে রাখার জন্য খেলছে। সেটার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে।

নিলামে ব্যর্থতা: কেকেআরের গোলমালটা শুরু হয় নিলাম টেবিল থেকে। মিচেল স্টার্ক, নীতীশ রানা, ফিল সল্টকে রাখাই হয়নি। ধরে রাখা যায়নি, গত বারের আইপিএলজয়ী অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারকে। শোনা যায়, শ্রেয়স ২৬ কোটি টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু নাইট কর্তাদের নাকি শ্রেয়সকে ২৬ কোটির 'যোগ্য' প্লেয়ার মনে হয়নি। উল্টে নিলাম থেকে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে কেকেআর কেনে বিশাল ২৩.৭৫ কোটি টাকা দিয়ে। পরিণাম? পরিণাম- গোটা মরশুম জুড়ে ভেঙ্কটেশের চূড়ান্ত ব্যর্থতা। পরিসংখ্যান বলছে, এবার ১১ ম্যাচের ৭ইনিংসে ভেঙ্কটেশ রান করেছেন মাত্র ১৪২! ব্যাটিং গড় ২০.২৯! উল্টো দিকে শ্রেয়স বর্তমানে পাঞ্জাব কিংসের নেতৃত্বের ব্যাটন হাতে নিয়ে প্লে অফে ঢোকার দোরগোড়ায়!

ভুল দল নির্বাচন: গোটা মরশুমে আন্দ্রে রাসেলের একটা সেট ব্যাটিং অর্ডার তৈরি করতে পারেনি নাইট ম্যানেজমেন্ট! ১৩-টা ম্যাচ খেলে ফেলেও ওপেনিং জুটির দুর্দশা কাটাতে পারেনি টিম। আনরিখ নখিয়ার মতো আগুনে গতির পেসারকে সাড়ে ছ'কোটি টাকা দিয়ে কিনে খেলানো হয়েছে সাকুল্যে একটা ম্যাচ। বরং 'নখদন্তহীন' স্পেনসর জনসনকে খেলিয়ে যাওয়া হয়েছে ম্যাচের পর ম্যাচ! বৈভব অরোরার মতো অতি সাধারণ পেসারের হাতে পাওয়ার প্লে-ডেথ বোলিংয়ের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে।

অহেতুক বিতর্ক: কখনও পিচ নিয়ে অযাচিত মন্তব্য। কখনও দলের টিম ম্যানেজমেন্টের বিবাদের খবর। কখনও ড্রেসিংরুমে গৌতম গম্ভীরের অনুপস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত আলোচনা। গোটা মরশুমে কেকেআর বেশিরভাগ সময় থেকেছে অহেতুক বিতর্কে।

রাহানের অধিনায়কত্ব: প্রায় গোটা মরশুম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছেন রাহানে। আসলে নাইটদের ডিএনএ বুঝে উঠতে সময় লেগেছে তাঁর। নিজের দলের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে উঠতে পারেননি। তাই কোন মাঠে কাকে খেলাতে হবে, কখন কাকে বল করাতে হবে বুঝে উঠতে পারেননি।

বৃষ্টি: এবার কেকেআরের দু'টো ম্যাচ যদি বৃষ্টিতে পণ্ড। এর মধ্যে একটি ঘরের মাঠে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে। যাতে প্রথমে ব্যাট করে ২০৭ রান তোলে পাঞ্জাব। পরে আর খেলা হয়নি। নাইট ম্যানেজমেন্ট মনে করে ওই ম্যাচটি জিততে পারত কেকেআর। আর দ্বিতীয় যে ম্যাচটি পণ্ড হল, সেটা চিন্নাস্বামীতে। শেষ ৬টা ম্যাচের ৬টায় যেখানে জিতেছে কেকেআর। সেটাও জেতার মতো ম্যাচ ছিল বলে নাইট ম্যানেজমেন্টের দাবি।

অল্পের জন্য হার: বৃষ্টিতে যদি দুটি ম্যাচ পণ্ড হয়ে থাকে, তা হলে দু'টো ম্যাচ নাইটরা হেরেছে স্রেফ নিজেদের দোষে। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে কেকেআর মাত্র ১১২ তাড়া করতে পারেনি। আবার ইডেনে লখনউয়ের দেওয়া ২৩৮ রানের টার্গেট প্রায় তুলে ফেলেছিল কেকেআর। একটা লম্বা সময় পর্যন্ত রাহানেদরই সম্ভাব্য জয়ী দেখাচ্ছিল। অথচ সেই ম্যাচ কেকেআর হেরে আসে শেষ পর্যন্ত ৪ রানে। বিদঘুটে ব্যাটিং অর্ডার নির্বাচনের খেসারত দিয়ে।

খারাপ ফর্ম: রিঙ্কু সিংকেও এবার পরিচিত রিঙ্কু সিং মনে হয়নি। গোটা মরশুমে কিছুই করেননি রমণদীপ সিং। হর্ষিত রানা গত মরশুমের ছায়ামাত্র। আর ভেঙ্কটেশের কথা আগেই বলা হয়েছে।