ছবিতে তিস্তাপারের সারদাপল্লিতে চলছে মণ্ডপ তৈরির কাজ।
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গতবছর কোজাগরি লক্ষ্মীপুজোতে মাটির ঘট বসিয়েছিলেন গহবধূ কল্পনা ব্যাপারি। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সেই ঘট ভাঙা হল। ঘট ভেঙে বেরিয়েছে ৫৪৮ টাকা। এই টাকাতেই এবার তিস্তাপারের দুগ্গা মা আসবে। হবে জাঁকজমক। পুজো হলেও উমার আরাধনায় আহামরি আয়োজন করতে পারেন না জলপাইগুড়ির তিস্তাপারের সারদাপল্লির বাসিন্দারা। গোটা গ্রামেই দিন আনি দিন খাই পরিবারের বাস। উপার্জনের পয়সা সরিয়ে রেখেই প্রতিবার পুজোর চাঁদা দেওয়া হয়। তারপর শরতের শারদপ্রাতে কৈলাস থেকে মা আসেন সারদাপল্লিতে। সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। তাই পুজোর কটি দিন জাঁকজমকের ইচ্ছে থাকলেও তেমনভাবে কিছুই করা হয়ে ওঠে না।
গতবারই তাই আলো ঝলমলে দুগ্গা মাকে দেখতে পণ করেছিলেন গ্রামের বধূরা। সেইমতো বসেছিল লক্ষ্মীর ঘট। কল্পনা ব্যপারির পাশাপাশি মিনু হাওলাদার ঘট ভেঙে পুজো কমিটিকে দিলেন ৬০৮ টাকা। হ্যাঁ, গৃহবধূদের সঞ্চয়ের টাকাতেই এবার সারদা পল্লির পুজোয় থাকবে আলোর রকমারি সাজ। জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর পারে এখন আগমনীর সুর। বালির চরে কাশের ফুল জানান দিচ্ছে পুজো আসছে। সেই আগমনীর সুরে এবার ভিন্ন মাত্রা যোগ করলেন গৃহবধূরা। পুরুষদের সঙ্গে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে মায়ের বাপের বাড়ির আগমনের পথ মসৃন করছেন তাঁরা।
মিনু হাওলাদার জানান, আকর্ষণীয় বলতে একটু বড় আকারে প্রতিমা। মণ্ডপ আর আকর্ষণীয় আলোর ব্যবস্থা। পুজোর চারদিন দুপুরে গ্রামের সকলের জন্য খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা থাকবে মণ্ডপে। গৃহবধূ মধু হাওলাদার জানান, গত বছর পুজোর পরেই জোট বেঁধে এগিয়ে আসেন গ্রামের গৃহবধূরা। তাঁরাই দশমীর মেলা থেকে মাটির ঘট কিনে পুজোর জন্য টাকা জমানো শুরু করেন। এখনও পর্যন্ত মহিলাদের কমিটিতে জমা পড়েছে তরফে ৩১ হাজার ৭০০ টাকা। বলা বাহুল্য, মহিলাদের উদ্যোগে জমানো টাকায় প্রতিমা ও মণ্ডপের বায়না হয়ে গিয়েছে। বাকি টাকা চাঁদা তুলে জোগাড় করে নেবেন। এমনটাই দাবি সারদাপল্লির বাবু বিশ্বাসের। বাড়ির মহিলাদের এগিয়ে আসার ঘটনায় এবার তিস্তাপারের পুজো শুধু আয়োজনেই নয়, আকর্ষণীয়ও হবে আশাবাদী পুজো উদ্যোক্তা বাবু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.