স্টাফ রিপোর্টার: মনখারাপের মেঘলা আকাশ সপ্তমীর সকালেই বলে দিয়েছিল দিনটা ভাল যাবে না। যাওনি। দুপুর গড়িয়ে বিকেল একটা অসুর এসে তছনছ করে দিয়েছে ঠাকুর দেখার আনন্দ। রাত গড়িয়েছে। সে যেখানে তাণ্ডব চালিয়েছে। হাওয়া অফিস বলেছে, দশমীর দিন সে আরও বাড়াবাড়ি করবে। ছাড় দেবেনা অষ্টমী-নবমীতেও। তাহলে কি এই পুজোয় সেই দৈত্যের হাতের পুতুল হয়ে কাটবে কলকাতার?
“ফুঃ! কী যে বলেন দাদা”-একডালিয়া থেকে সবে স্ত্রী ও দেড় বছরের মেয়েকে কোলে করে বেরিয়েছেন অমল দাস। ট্রেন ধরতে দুপুর আড়াইটে বর্ধমান স্টেশনে
পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফিরবেন রাত কাবার করে। তাড়াহুড়োর মধ্যে তাঁর ছুড়ে দেওয়া একটা ডায়লগ বহুদিন মনে রাখার মতো। “শুকনো প্যান্ডেল অনেক দেখেছি। এবার ভেজা দেখছি।”
রাত যত গড়িয়েছে ততই সদ্য স্নান সেরে ওঠা শরীরের মতো মায়াবী মনে হয়েছে কলকাতাকে। বৃষ্টির সঙ্গে আলোর ধারাপাতেও অবগাহন করেছেন আট থেকে আশি। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম। বারুইপুর থেকে কাশীপুর, ঠাকুরপুকুর থেকে উল্টোডাঙা মানুষে মানুষে থই থই। হয়তো এর পিছনে বৃষ্টি-অসুরের তাড়া খাওয়ার আশঙ্কা কাজ করেছে৷ যত বেশি ঠাকুর দেখে নেওয়া যায়৷ সকাল এগারোটার পর থেকেই যানজটে প্রায় অবরুদ্ধ হয় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি৷ মানুষ অবশ্য হেঁটেই ঘুরেছে প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে।
হাতে ছাতা। কারও পরনে বর্ষাতি। প্যান্ডেলের রঙে মিলেছে রংবেরঙের ছাতাও। পুজোর লাইনের এই নয়া রূপ খুব একটা বেশি দেখেনি কলকাতা। তবে রক্ষে, এই বৃষ্টি ভিজিয়েছে বটে, তবে ভাসায়নি। ফলে জলে ভেজা চকচকে রাজপথ দিয়ে হেঁটে চলতে ফিরতে পেরেছেন দর্শনার্থীরা। সকালেই কলকাতার কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল, সন্ধ্যা একই দশা। সেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছিল৷ হাওয়া অফিস জানিয়েছে, যেখানে মেঘ দাঁড়াচ্ছে সেখানেই বৃষ্টি হচ্ছে। উদ্যোক্তারাও চিন্তায় রয়েছেন বৃষ্টি তাঁদের শিল্পকর্মকে ছাড় দেবে তো? মহাসপ্তমীর বিকেলে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, রোদ-মেঘের খেলা চলবে নবমী অবধি। দশমীর দিন তা বাড়বে। ঝাড়খণ্ড ও উত্তরপ্রদেশের উপর জোড়া
ঘূর্ণাবর্তই নাকি অসুরের ভূমিকা পালন করেছে এবছর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.