শুভময় মণ্ডল: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজের জন্য তাসের দেশে পরিণত হয়েছে মধ্য কলকাতার বউবাজার অঞ্চল। মাটি আলগা হয়ে একের পর এক ভেঙে পড়ছে বাড়ি। বউবাজারের দুর্গা পিতুরী লেন, স্যাঁকরা পাড়া এখন হয়ে উঠেছে অভিশপ্ত পুরী। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। পুজোর আগে ভিটে ছাড়া হওয়ার বেদনায় ক্লিষ্ট বাসিন্দারা। সেইসঙ্গে দাঁড়ি পড়েছে অর্ধশতক ধরে হয়ে আসা দুর্গাপুজোয়। বাড়ি ধসের কারণে এবছরই বউবাজারের স্যাঁকরা পাড়ার পুজো বন্ধ। মুখ ভার বাসিন্দাদের। কিন্তু এবার পুজো উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজো (লেবুতলা পার্ক)। ওই পুজো কমিটির তরফে স্যাঁকড়া পাড়ার অর্ধশতকের পুরনো দুর্গাপুজোর দায়িত্ব নিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এবছর মধ্য কলকাতার অন্যতম ক্রাউডপুলার পুজো সন্তোষ মিত্র স্ক্যোয়ারের দুর্গাপুজোর বড় চমক সোনার প্রতিমা। প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে এই প্রতিমা। ৫০-৬০ কেজি ওজনের হবে এই প্রতিমা। পুজোর বাজেট প্রায় ২০ কোটি। ২০১৭ সালের পুজোর পর ফের একবার নয়া চমক নিয়ে হাজির হচ্ছে কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত পুজো লেবুতলা পার্ক তথা সন্তোষ মিত্র স্ক্যোয়ার দুর্গাপুজো কমিটি। প্রতিমা গড়ছেন শিল্পী মিন্টু পাল। বেশ কয়েক বছর আগে দেশপ্রিয় পার্কে সবচেয়ে বড় দুর্গা গড়ে চমক দিয়েছিলেন তিনি। এবার সবচেয়ে দামী দুর্গার নাম তাঁর সঙ্গে জুড়তে চলেছে। মণ্ডপসজ্জা করছেন শিল্পী দীপক ঘোষ। মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কাজও শেষের মুখে।
কিন্তু পাশের পাড়ার পুজো বন্ধ হচ্ছে শুনে মন খারাপ হয়ে যায় লেবুতলা পার্ক পুজো কমিটির। পুজোর সম্পাদক সজল ঘোষ বলেন, ‘আমাদের পুজো কমিটির তরফে স্যাঁকরা পাড়া দুর্গোৎসব কমিটির কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যে এবছর আমরা তাদের পুজোর দায়িত্ব নেব। লেবুতলা পার্ক ও স্যাঁকরা পাড়ার যৌথ উদ্যোগে পুজো হোক, সেটাই আবেদন রেখেছি আমরা।’ উল্লেখ্য, এর আগে উত্তর কলকাতার জগৎ মুখার্জি পার্ক পুজো কমিটি পাশে দাঁড়িয়েছে স্যাঁকরা পাড়া দুর্গোৎসব কমিটি। এবারের পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য জগৎ মুখার্জি পার্কের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে স্যাঁকরা পাড়ার বাসিন্দাদের। এবার বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্তরা পাশে পেলেন লেবুতলা পার্ককেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.