সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরীর জগন্নাথধামের আদলে দিঘায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শ্রীক্ষেত্র। বেলেপাথর নির্মিত জগন্নাথদেবের সেই মন্দিরের দ্বার খুলে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। গত ৩০ এপ্রিল থেকে এই মন্দির দর্শনে ইতিমধ্যেই ভিড় জমিয়েছেন হাজার হাজার ভক্ত। তারই মাঝে অবশ্য দু,একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তার মধ্যে অন্যতম দিঘায় জগন্নাথধাম নাম। শাস্ত্রজ্ঞদের একাংশের মত, এদেশে চারটি ধামের মধ্যে অন্যতম পুরীর জগন্নাথধাম। একই নামে দিঘাতেও জগন্নাথ মন্দির কী করে হয়? এই ‘কূট’ প্রশ্ন যে সত্যিই অন্তঃসারশূন্য, বিতর্কের জন্যই বিতর্ক তোলা, সেই মত জানাচ্ছেন শাস্ত্রজ্ঞদেরই আরেকাংশ। জগন্নাথধাম নামে কোনও বিতর্কই নেই, শাস্ত্র ব্যাখ্যা করেই তা জানালেন হিন্দু ধর্মের অন্যতম কাণ্ডারি ইসকন, কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস। কী সেই ব্যাখ্যা?
ইসকন, কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস দিঘার জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্টেরও অন্যতম সদস্য। দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে থেকে একেবারে শাস্ত্র মেনে সমস্ত ধর্মীয় কাজে শামিল ছিলেন তিনি। পুরীর জগন্নাথধামের অন্যতম পুরোহিত রাজেশ দ্বৈতাপতির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। এই মন্দিরকে ‘ধাম’ বলা নিয়ে রাধারমণ দাসের ব্যাখ্যা, ”সনাতন হিন্দু শাস্ত্রমতে, মূলত চারটি ধাম আছে আমাদের দেশে – বদ্রীনাথ, পুরীর জগন্নাথধাম, রামেশ্বরম, দ্বারকা। এর বাইরেও ধাম বলে পরিচিত আরও অনেক তীর্থক্ষেত্র। যেমন, বাংলার নবদ্বীপধাম, উত্তরপ্রদেশের বৃন্দাবনধাম। আসলে যেখানেই ভগবানের প্রতিষ্ঠা, সেই জায়গা ধাম বলে পরিচিত হয়। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে তো দেবতার অধিষ্ঠান, সেই জায়গা কীভাবে সাধারণ হয়ে থাকবে? তা অবশ্যই পবিত্র স্থান। তাই দিঘার মন্দিরকে যে জগন্নাথধাম বলা হচ্ছে, তাতে কোনও অসুবিধা নেই। সম্পূর্ণ শাস্ত্র মেনেই এই মন্দিরকে জগন্নাথধাম বলা হচ্ছে।”
এরপর রাধারমণ দাস করজোড়ে বলেন, ”হাতজোড় করে বলছি, যাঁরা এটা নিয়ে বিতর্ক করছেন, তা পুরোপুরি অযথা। কোনও বিতর্ক করবেন না। এসবের অর্থ ভগবানের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেওয়া।” তাঁর মতে, ‘ধাম’ নিয়ে অযথা সমালোচকরা মোটেই হিন্দু ধর্মের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল নন। মূলত বিজেপির তরফেই এই বিতর্ক তোলা হয়েছিল। তবে সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁদের সমস্ত দাবি, বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছেন রাধারমণ দাস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.