Advertisement
Advertisement
Akshaya Tritiya

তৃতীয়া তিথিতে লুকিয়ে মহাভারত সূচনার ইতিহাস, হিন্দু শাস্ত্রে আর কী গুরুত্ব অক্ষয় তৃতীয়ার?

জেনে নিন এবার কখন অক্ষয় তৃতীয়া?

History of akshaya tritiya
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:April 29, 2025 4:26 pm
  • Updated:April 29, 2025 4:26 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যা কিছু দীর্ঘস্থায়ী, তা-ই অক্ষয়। সঙ্গে বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি। দুই মিলিয়ে অক্ষয় তৃতীয়া। বাংলা তথা ভারতবর্ষের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। লক্ষ্মী ও সিদ্ধিদাতা গণেশের পুজো করে নতুন শুভ কাজ শুরু করা হয়।

কিন্তু কেন এই দিনটাই শুভারম্ভের জন্য শুভ? ব্রহ্মপুরাণ, পৌরাণিক কাহিনি, পুরাণবিদদের নানা মতে এই তিথিতেই নাকি মহাভারতের জন্ম, জড়িয়ে গণেশের অর্ধভগ্ন দাঁতের কাহিনি। এই দিনেই নাকি জন্ম বিষ্ণুর দশম অবতার ক্ষত্রিয় নিধন যজ্ঞে নামা বিতর্কিত পুরুষ পরশুরামের। গঙ্গার মর্ত্যে পদার্পণ এই দিনেই। বলা হয় সত্যযুগ শুরু হয়েছিল অক্ষয় তৃতীয়াতেই!

Advertisement

অক্ষয় তৃতীয়া যেন যুগ যুগ ধরে শুভ সূচনা, পরিবর্তনের ‘নিশান’ বহন করে চলেছে! যেন শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথির কোলে কালের সূচনা। নবদ্বীপের রঘুনানন্দ ব্রহ্মপুরাণ থেকে কয়েকটি লাইন টেনে বলেছেন, এই দিনেই শুরু হয়েছে সত্যযুগ। তার জন্য অক্ষয় তৃতীয়াকে যুগারম্ভও বলা হয়।

অক্ষয় তৃতীয়ার সঙ্গে জড়িয়ে গঙ্গার মর্ত্যে আসার যোগও। ভারতবর্ষের দীর্ঘতম নদী গঙ্গা। যার প্রবাহ মর্ত্যলোকেই ছিল না! ব্রহ্মার মানসকন্যাকে ইহলোকে নিয়ে আসেন রাজা ভগীরথ। সেই দিনটিও নাকি অক্ষয় তৃতীয়া। কিন্তু পুরাণবিদদের মধ্যে তা নিয়ে বিরোধ আছে। কেউ কেউ বলেন বৈশাখ নয়, গঙ্গা মর্ত্যে আসেন জ্যৈষ্ঠ মাসে। আরেকপক্ষ মনে করেন, তীব্র খরস্রোতা গঙ্গা সরাসরি মর্ত্যে আসলে তার প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তবে সব বিপদের ‘মুশকিল আসান’ দেবাদিদেব মহাদেব। চন্দ্রচূড় মাথায় ধারণ করলেন জাহ্নবীকে। সেই দিনটি ছিল অক্ষয় তৃতীয়া।

আবার ক্ষত্রিয় বিনাশী, মাতৃহত্যার দায়ে যার কুড়ুল রক্তস্নাত সেই পরশুরামের জন্ম এই অক্ষয় তৃতীয়াতেই। যার ফলে অনেক বিষ্ণুমন্দিরে এই অক্ষয় তৃতীয়াকে পরশুরাম জয়ন্তী হিসাবে পালন করা হয়। তবে ‘দেবী ভাগবত’, ‘বিষ্ণুপুরাণ’ ও ‘বায়ুপুরাণে’ পরশুরামের জন্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন কিংবদন্তি পাওয়া যায়।

কিন্তু মহাভারতের সঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়ার কী সম্পর্ক? প্রচলিত মতে, সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার নির্দেশে ব্যাসদেব মহাভারত লিখতে রাজি হন। কিন্তু নিজে কুরু বংশের একাধিক প্রজন্ম দেখার দরুণ জানতে এই মহাকাব্যের আয়তন কতটা হতে চলেছে। তিনি একজন লিপিকার চান। গণেশকে সেই দায়ভার দেওয়া হয়। সিদ্ধিদাতা রাজি হন একটানা লিখে যাওয়ার শর্তে। মনে করা হয় কাজ শুরু হয় বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়ার দিন। এদিকে লাগাতার লিখতে লিখতে কলম ভেঙে যায় গণেশের। পার্বতীপুত্র লেখা না থামিয়ে নিজের দাঁত ভেঙে সেই ভগ্নাংশকে কলম হিসাবে ব্যবহার করেন। অতএব মহাকাব্য ও গণেশের ভাঙা দাঁতের সঙ্গে জড়িয়ে গেল সেই অক্ষয় তৃতীয়া।

কখন এবারের অক্ষয় তৃতীয়া?

এই বছর শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথি ৩০ এপ্রিল। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে তৃতীয়া তিথি ১৫ বৈশাখ, ২৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে শুরু হবে। শেষ হবে ৩০ এপ্রিল, বুধবার দুপুর ২টো ১৩ মিনিটে। গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে, তৃতীয়া তিথি আরম্ভ ২৯ এপ্রিল রাত ৯টা ৪ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে। শেষ হবে ৩০ এপ্রিল, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement