নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: দীর্ঘদিন ধরে ইছামতীর বুকে বাসা বেঁধেছিল কচুরিপানা। এলাকায় বাড়ছিল মশা-মাছির উপদ্রব। ছড়াচ্ছিল ডেঙ্গু আতঙ্ক। ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে৷ কিন্তু এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তো আর বেশিদিন থাকা যায় না। তাই উদ্যোগ নিয়ে নদী পরিষ্কারের কাজে হাত লাগিয়েছে বনগাঁ মহকুমা প্রশাসন।
সম্প্রতি ইছামতি নদীতে কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে বাসিন্দারা। বিভূতিভূষণ ঘাট থেকে বনগাঁ শহর পর্যন্ত কচুরিপানা তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে আট কিলোমিটার নদী থেকে কচুরিপানা তোলা পরিষ্কারের কাজ হবে। এর জন্য মঞ্জুর করা হয়েছে ৭৮ লক্ষ টাকা৷ বিভূতিভূষণ ঘাট এলাকার একটি অংশ ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়ে গিয়েছে৷
শনি ও রবিবার বুলবুলের দাপটে ঝড়বৃষ্টিতে নদীর বেশ কিছুটা অংশ স্বাভাবিকভাবেই কচুরিপানামুক্ত হয়েছে৷ ইছামতীর স্বচ্ছ নীল জল দেখে শান্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মনে। তাঁদের বক্তব্য, বহু বছর ধরে নদী কচুরিপানায় আবদ্ধ ছিল। স্নান করা যেত না, জামাকাপড় কাচা যেত না। জ্বর, ডেঙ্গু, সাপের উপদ্রব হত৷
মাধবপুরের বাসিন্দা রাধারানি অধিকারী বলেন, ‘নদী কচুরিপানায় আবদ্ধ থাকায় আমরা স্নান করতে পারতাম না। নদীর জল পচে গিয়েছিল। ওই জলে স্নান করলে ঘা, চুলকানি দেখা দিত৷ বৃষ্টির ফলে নদীর জল এখন পরিষ্কার হয়েছে, আমরা স্নান করতে পারছি৷ তাছাড়া কচুরিপানা থাকায় মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে পারতেন না৷ জীবিকা হারিয়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছিলেন।কিন্তু নদী এখন কচুরিপানা মুক্ত হওয়ায় সকলেই আশায় বুক বাঁধছেন, এবার তারা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা চালাতে পারবেন৷ চাষিরাও খুশি। তাঁরা মনে করছেন, চাষের কাজেও এবার নদীর জল ব্যবহার করা যাবে।’ প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কচুরিপানা থাকায় প্রতি বছর জ্বর, ডেঙ্গু দেখা দিত৷ এলাকায় কচুরিপানা মুক্ত হওয়ায় আমরাও ডেঙ্গুর কবল থেকে মুক্ত হলাম৷’ বনগাঁর মহকুমা শাসক ড. কাকলি মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘সেচ দপ্তরের সহযোগিতায় সাড়ে আট কিলোমিটার নদী পরিষ্কার করা হচ্ছে, বাকি অংশ পরিষ্কার করার জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.