ছবি: প্রতীকী
গৌতম ব্রহ্ম: চ্যালেঞ্জের মুখে করোনা রোগীর (Covid Patient) নিভৃতবাসের সময়সীমা কমানোর সিদ্ধান্ত! ব্রিটেনে হওয়া একটি গবেষণা সাফ জানিয়ে দিল, সংক্রমিত হওয়ার ১০ দিন পর্যন্ত করোনা রোগীর মধ্যে অন্যকে আক্রান্ত করার ক্ষমতা ভালই মজুত থাকে। অতএব, নিভৃতবাস বা হোম আইসোলেশন কমিয়ে পাঁচদিন বা সাতদিন করার সিদ্ধান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বরং কমপক্ষে ১০ দিনের নিভৃতবাস বিজ্ঞানসম্মত। আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে গবেষণায়। তা হল, সংক্রমিত হওয়ার দু’দিনের মধ্যেই কোভিড রোগীর দেহে উপসর্গ ফুটে ওঠে। এই তথ্যটিও নতুন।
৩৪ জন ব্যক্তির উপর উচ্চপর্যায়ের গবেষণা চালিয়ে এমনই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ ও ডাবলিনের একটি আধাসরকারি সংস্থার বিজ্ঞানীরা। তাঁদের বক্তব্যের নির্যাস হল-ভাইরাস যত বেশি খেলার জায়গা পাবে, তত বেশি ড্রিবল করবে। নতুন নতুন অবতারে ময়দানে হাজির হবে। তাই করোনাকে হালকাভাবে নেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে প্রমাণ হতে পারে। এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন ভাইরোলজিস্টদের একাংশ। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, করোনা সম্পর্কে অনেক কিছুই আমাদের অজানা। গবেষণার সুযোগও সেভাবে মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে অনেক দেশই গা ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে। হোম আইসোলেশনের সময়সীমা কমিয়ে দিচ্ছে। কেউ আবার বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের নীতি থেকে সরে এসেছে। এই কর্মকাণ্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজ্ঞানীরা।
তাৎপর্যের বিষয় হল, এই গবেষণাটি হয়েছে লন্ডনে (London)। সেখানকার সরকারই তো করোনা রোগীদের সাধারণ মানুষের মতো ঘোরাফেরার ছাড়পত্র দিয়েছে। মাস্ক (Mask) ব্যবহারের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে। গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে করোনার প্রথম দিকের আলফা অবতার। লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ এবং ডাবলিনের একটি আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান যৌথ উদ্যোগে এই গবেষণা চালায়। দেখা যায়, যে ৩৪ জনের উপর চ্যালেঞ্জ স্টাডিটি হয়েছে, তার মধ্যে ১৮ জন সংক্রামিত হয়েছেন। ১৬ জনের দেহে ভাইরাস থাকেনি। এবার, ওই ১৮ জনের মধ্যে ১৬ জনের মৃদু থেকে মধ্যমানের উপসর্গ দেখা দেয়। দু’জন ছিলেন উপসর্গহীন, যদিও তাঁরা পূর্ণমাত্রায় ভাইরাস ছড়াতে সক্ষম ছিলেন।
ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, এই পরীক্ষা করোনা ভাইরাসের তাৎপর্যপূর্ণ সংক্রমণ ক্ষমতা তুলে ধরেছে। মাত্র দু’দিনের মধ্যেই যে মানুষের দেহে কোভিডের লক্ষণ ফুটে উঠতে পারে, সে ধারণা আগে ছিল না। সংক্রমিত ব্যক্তি ১০ দিন পর্যন্ত অনায়াসে ভাইরাস ছড়াতে পারে, তাই অন্তত ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করা উচিত। এই নিরীক্ষার ফলাফলে ব্যক্তি পার্থক্য প্রবল। এর কারণ স্পষ্ট নয়। সম্ভবত ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রতিরোধ ক্ষমতা এর জন্য দায়ী। পরবর্তী চ্যালেঞ্জ স্টাডিতে ইমিউনিটি সম্বন্ধীয় তথ্য এর সঙ্গে যোগ হলে সামগ্রিক বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.