নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: নগর সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিপন্ন হয়েছে প্রকৃতি ও পরিবেশ (Environment)। দূষণের বিষ জমেছে জলে, মাটিতে, বাতাসে। তার কুপ্রভাব হয়ত রোজ টের পাই আমরা, কিন্তু গুরুত্ব দিই না। সত্যিই কি দিই না? তাহলে দুর্গাপুরের (Durgapur) দম্পতি হাজার কিলোমিটার পথ হেঁটে দিল্লি গিয়ে সোজা রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছে গেলেন কীসের তাগিদে? ধরিত্রীকে সুস্থ, সুন্দর রাখার তাগিদেই তো? অন্তত রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তো সেই অঙ্গীকারই রয়েছে। দুর্গাপুরের পৃথ্বীরাজ আর রমা পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দিতে পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানীর বুকে। রাষ্ট্রপতিকে দাবিপত্র দিয়ে নিজেদের স্বপ্নপূরণের রাস্তা প্রশস্ত করতে চান এই দম্পতি।
৫২ দিন। ১৫০০ কিলোমিটার। এসব স্রেফ পরিসংখ্যান নয়। যাত্রা শুরু ২৫ জানুয়ারি, যাত্রা শেষ ১৮ মার্চ। ক্যালেন্ডারের পাতায় লাল দাগ দিয়ে রাখা কোনও দিনক্ষণ নয় এটা। এসবই আসলে এক বড় কাজের সূচনা মাত্র। দু’মাসেরও কম সময়ে ১৫০০ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে দিল্লি (Delhi) পৌঁছেছেন দুর্গাপুরের পৃথ্বীরাজ সঞ্জয় চক্রবর্তী ও রমা চক্রবর্তী। গত ১৮ মার্চ দিল্লি পৌঁছনোর পর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেন। শেষপর্যন্ত সোমবার, ১০ এপ্রিল তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ মেলে।
আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি পৃথ্বীরাজ ও রমা। আট দফা দাবিসমেত স্মারকলিপি তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে। তাতে সবটাই পরিবেশ, প্রকৃতি বাঁচানোর ডাক। গঙ্গা-সহ দেশের নদীগুলি পরিষ্কার রাখা, গাছ লাগানো, সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ-সহ একাধিক কাজের জন্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে আমজনতাকে ডাক দিচ্ছেন পৃথ্বীরাজ-রমা। সোমবার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সুুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া (SS Aluwalia)।
দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক ব্যক্তির কাছে তাঁদের একান্ত আরজি, প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যদি তিনি গ্রহণ করেন, তাহলে হয়ত দেশবাসী আর এতটা উদাসীন হয়ে থাকবে না। আর তখনই সার্থক হবে তাঁদের ১৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রা। মঙ্গলবারই তাঁরা ফিরছেন দুর্গাপুরে। এবারও কি হেঁটেই ফিরবেন সেই ১৫০০ কিলোমিটার? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.