সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্বেতশুভ্র বরফে গোলাপি আভা। ইটালির আল্পসে (Alps) দিগন্তবিস্তৃত তুষার জমিতে এমন অস্বাভাবিক রঙের খেলা দেখে প্রাথমিকভাবে মুগ্ধ হয়েছিলেন সকলে। বিশেষত পর্যটকরা। এ দৃশ্য তো নতুন! তবে সেই মুগ্ধতা ভাঙতে বেশি সময় লাগল না, যখন জানা গেল, এই সুন্দর দৃশ্যের মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে ভয়ংকর বিপদ। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আল্পসের হিমবাহে জমছে একধরনের শ্যাওলা (Algae)। যা কি না সূর্যরশ্মি শোষণ করে উত্তপ্ত হয়ে বরফের গলনকে ত্বরান্বিত করে। আর সেই শ্যাওলার বংশবিস্তারে সূর্যালোকের খেলায় শুভ্র তুষারের বুকে গোলাপির রঙের খেলা।
মেরু অঞ্চলের সুবিস্তৃত বরফের কাজ আসলে সূর্যরশ্মির বেশিরভাগটা প্রতিফলিত (Reflection) করে উষ্ণতা হিমাঙ্কের নিচে রাখা। বছরের পর বছর ধরে এটাই হয়ে এসেছে। তাই দুই মেরু প্রদেশের দেশগুলো অধিকাংশ সময়ে ঢাকা থাকে পুরু বরফের চাদরে। কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়নের অভিশাপে গলছে সেই বরফ। কিন্তু তার পিছনে রয়েছে এক ধরনের শ্যাওলার প্রভাব। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গ্রিনল্যান্ডে অনেকদিন ধরেই বরফের খাঁজে খাঁজে এই শ্যাওলা জন্মাচ্ছে। তাই সেখানকার বরফ গলছে দ্রুত। এবার একই ধরনের শ্যাওলা দেখা গেল ইটালির আল্পসেও। ইটালির ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের সদস্যরা বলছেন, এটা বিপদের ইঙ্গিত। উষ্ণায়নের অভিশাপে সামান্য শ্যাওলাও কত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে, গ্রিনল্যান্ডই তার উদাহরণ।
যদিও সুইজারল্যান্ডের উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডি মোরোর এই শ্যাওলাকে ‘বিপজ্জনক’ বলে মেনে নিতে নারাজ। তাঁর দাবি, প্রতি বছর বসন্তে হিমবাহগুলিতে এ ধরনের শ্যাওলা জন্মায়, আবার নির্দিষ্ট সময় পর মরেও যায়। তাদের দ্বারা খুব বেশি কোনও ক্ষতি হয় না। ক্ষতি বেশ হোক বা কম, বরফের গোলাপি আভা দেখে প্রাথমিক উচ্ছ্বাস কিন্তু এখন অনেকটাই স্তিমিত সৌন্দর্যপ্রেমী পর্যটকদের মধ্যে। বরং এখন অপেক্ষা, কবে আবার বরফশুভ্র চেহারা ফিরে পায় আল্পস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.