ফাইল ছবি।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: অবেশেষে অযোধ্যা পাহারতলির জঙ্গলে লাগাতার অগ্নিকাণ্ডের রহস্যভেদ হল। শুক্রবার পুরুলিয়ার (Purulia) বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের বুড়দা বিটের উকাদার জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় বন্যপ্রাণ শিকারের জন্য ব্যবহৃত তিনটি তারের ফাঁদ। এতেই বনদপ্তর মনে করছে, ফাঁদ পেতে শিকার ধরতেই জঙ্গলে আগুন লাগাচ্ছিল চোরাশিকারিরা।
অভিযোগ, গ্রীষ্মের শুষ্ক আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গলের নিচের দিকে বন্যপ্রাণ শিকারের জন্য ফাঁদ পেতে রাখা হয়। তারপর জঙ্গলের উপরের দিকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ভয়ে বন্যপ্রাণীরা নিচের দিকে নামতেই ফাঁদে আটকা পড়ে যায়। এভাবেই চোরাশিকারীরা শিকার করে বলে অভিযোগ। তারের সূত্র ধরেই ঘটনায় গ্রীষ্মকালে পুরুলিয়ার জঙ্গলে ঘন ঘন আগুন লাগার রহস্যেভেদ করল বনদপ্তর।
বাঘমু্ন্ডি বনাঞ্চল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি গ্রীষ্মের মরশুমে বুড়দা বিটের উকাদার পাহাড়–জঙ্গলে ঘন ঘন আগুন লেগেছে। তখনই বনদপ্তরের আধিকারিকরা সন্দেহ করেন যে, জঙ্গলে পড়ে থাকা জ্বলন্ত দেশলাই, বিড়ি, সিগারেট থেকে আগুন ছড়াচ্ছে না। বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলের আধিকারিক আলমগীর হক বলেন, “উকাদায় বারবার জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনার পরেই আমাদের সন্দেহ হয়। ফাঁদ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে পরিস্কার হয়ে গিয়েছে এই জঙ্গলে চোরাশিকারীদের আনাগোনা আছে। নাহলে বারবার আগুন নেভানোর পরও কীভাবে ‘দাবানল’ হবে? বাঘমুন্ডি বনাঞ্চল জুড়ে আমাদের তল্লাশি চলছে।”
কোভিডের থাবায় এই জেলার বনাঞ্চলে জঙ্গলের প্রবেশ পথে নাকা চেকিং ও দেহতল্লাশি বন্ধ হওয়ার পরেই চোরাশিকারিদের আবার নতুন করে দাপট বেড়েছে বলে অভিযোগ। ফলে বাঘমুন্ডি বনাঞ্চল জুড়ে এখন একেবারে টিম করে দিন-রাত টহল চলছে। ওই উকাদার জঙ্গলে হরিণ, গোল্ডেন জ্যাকেল, খরগোশ, সাপ, পাখি রয়েছে। এই গ্রীষ্মে বারবার জঙ্গলে আগুন লাগায় বিপদের মুখে পড়ে বন্যপ্রাণ। গাছপালা-সহ পাখি, সাপ মারা যায় বলে বনদপ্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে। অতীতেও এই জেলায় কোটশিলা ও রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের গড়পঞ্চকোট পাহাড়-জঙ্গল থেকে ফাঁদ উদ্ধার হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.