প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আজি যত তারা তব আকাশে/ সবে মোর প্রাণ ভরি প্রকাশে।’ সেদিন কি তিনি কল্পনাও করতে পেরেছিলেন একদিন তাঁর লেখা এই পঙক্তিই হয়ে যেতে পারে অলীক! তেমনই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন গবেষকরা। এমন দিন আসতে চলেছে যেদিন রাতের আকাশের দিকে তাকালে চোখে পড়বে না একটাও তারা। কেবল চাঁদ ছাড়া দেখা যাবে না কিছুই!
২০১৬ সালে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছিল, ‘মিল্কি ওয়ে’ তথা ছায়াপথ আর দৃশ্যমান নয় পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ মানুষের চোখে। আর সেজন্য দায়ী আলোর দূষণ। পরবর্তী কয়েক বছরে মানুষ যে সচেতন হয়নি তা বুঝিয়ে দিচ্ছে বর্তমান গবেষণা। পদার্থবিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার কাইবা এক গবেষক এই সংক্রান্ত গবেষণা চালাচ্ছেন আরও একদল গবেষকের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, মানুষ এখনও আলোর দূষণকে কোনও বিপদ হিসেবে দেখছেই না। ফলে সচেতনতাও বাড়ছে না। আর ততই বাড়ছে এই দূষণ। উজ্জ্বল হয়ে উঠছে রাতের পৃথিবী।
গবেষক জানাচ্ছেন, ‘লাইট-এমিটিং ডায়োডস’ তথা LED ও আলোর প্রকাশের অন্যান্য রূপের কারণে রাতের আকাশ ক্রমেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত আলো, পথের ধারে উজ্জ্বল আলোর বাড়বাড়ন্ত, বিজ্ঞাপনের আলো, খেলার মাঠে রাতের উজ্জ্বল আলো সব মিলিয়ে এত আলো আমাদের চোখ থেকে মুছে দিচ্ছে তারার (Star) দৃশ্যমানতা।
ক্রিস্টোফার জানাচ্ছেন, ‘রাতের আকাশ (Night Sky) আমাদের পরিবেশেরই অংশ। আমাদের আগামী প্রজন্ম যদি রাতের আকাশ দেখতে না পায় তাহলে তাদের জন্য সেটা একটা বড় বঞ্চনা হবে।’ গবেষণায় ধরা পড়ছে প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে বাড়ছে রাতের আকাশের উজ্জ্বলতা। আজ যে শিশু জন্মাচ্ছে, সে রাতের আকাশে ২৫০টি তারা দেখতে পায়। সেই শিশুই ১৮ বছরে পৌঁছলে দেখতে পাবে মাত্র ১০০টি তারা!
পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপ হচ্ছে। আর তাই এই দূষণকে কমাতে আলোর উজ্জ্বলতা কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। বাড়াতে বলছেন সাদা আলোর ব্যবহার বাড়াতে। আসলে আলোর এলইডির নীল আলো যেমন শরীরের ক্ষতি করে, তেমনই ওই আলো রক্তে শর্করার মাত্রাতেও সমস্যা আনে। পাশাপাশি বাড়ায় মেলোটোনিনের উৎপাদনও। এদিকে আলোর দূষণ বিভ্রান্ত করে সমুদ্রের কচ্ছপ ও পরিযায়ী পাখিদেরও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.