ফাইল ছবি।
আলাপন সাহা, দুবাই: ২০২৩-র সেই কালান্তক ১৯ নভেম্বরের কথা এখনও ভুলতে পারেনি ভারতবাসী। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্ধর্ষ খেলছিল রোহিত-বাহিনী। সবাই ধরেই নিয়েছিল যে, আহমেদাবাদে রোহিত শর্মরা ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দেবেন। ধরেই নিয়েছিল, বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবে মেতে ওঠা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু যাবতীয় সব স্বপ্ন চুরমার করে বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
দু’বছর পর আবারও ট্রফির জয়ের হাতছানি। আবার রোহিতদের সামনে অস্ট্রেলিয়া। তফাত বলতে সেটা বিশ্বকাপ ছিল। এটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ফাইনালের বদলে এটা সেমিফাইনাল। তবে সে সমস্ত নিয়ে ভেবে ভারতীয় টিম অতিরিক্ত চাপ নিতে চাইছে না। বরং রোহিত যতটা সম্ভব নিজেদের উপর ‘ফোকাস’ করছেন। সেমিফাইনাল মহারণে নামার আগে ভারতীয় অধিনায়ক বলছিলেন, “অস্ট্রেলিয়া খুব ভালো টিম। ওদের বিরুদ্ধে খেলতে সবসময় ভালো লাগে। শেষ তিনটে ম্যাচে আমরা যে ভাবে খেলেছি, সেমিফাইনালেও ঠিক সেভাবেই খেলে যেতে হবে। অস্ট্রেলিয়া কী করতে পারে, জানি আমরা। ওরা কীভাবে খেলে, সেটাও জানি। তবে আমার মনে হয় বিপক্ষে নিয়ে বেশি না ভেবে নিজেদের নিয়ে বেশি ফোকাস করাই উচিত।”
সঙ্গে ভারত অধিনায়কের সংযোজন, “ব্যাটিং, বোলিং সব কিছুতেই মন দিচ্ছি। বছরের পর বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া দুর্দান্ত পারফর্ম করে আসছে। জানি ম্যাচে কিছু কঠিন সময় আসবে। কখনও বা স্নায়ুর চাপেও ভুগতে হবে। কিন্তু সেমিফাইনালের চাপ দুটো টিমের উপরই থাকবে। তবে আমাদের নিজেদের খেলা নিয়ে ভাবতে হবে। যদি ঠিকঠাক সবকিছু যায়, তাহলে রেজাল্ট অবশ্যই ইতিবাচক হবে।” চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাঁচজন স্পিনার নিয়ে আসা নিয়ে প্রচুর কথাবার্তা হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, কেন যশস্বী জয়সওয়ালের পরিবর্তে বরুণ চক্রবর্তীকে নেওয়া হল? ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল, সেটার প্রমাণ নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। রোহিতরা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে। দুবাইয়ের পরিবেশ কেমন হবে, সেটা বুঝতে নিয়মিত ‘আইএল টি-টোয়েন্টি’ লিগের ম্যাচ দেখতেন। তারপরই পাঁচ স্পিনার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ঠিক হয়।
রোহিত বলছিলেন, “এই পিচে অনেক ক্রিকেট হয়েছে। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। তাই টুর্নামেন্টের শুরুর পাঁচ-দিন আগে আমরা এখানে চলে আসি। বেশ কয়েকটা ট্রেনিং সেশন পেয়েছি। দুবাই পিচের সঙ্গে আইসিসি অ্যাকাডেমির প্র্যাকটিস উইকেটের চরিত্র মোটামুটি এক। অনেকেই দলে পাঁচজন স্পিনার দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু টিম হিসেবে দেখতে হয়, কোন ব্যাপারটা দলকে সাহায্য করবে।”
অধিনায়ক হিসেবে তাতে লেটার মার্কস পাবেন ‘হিটম্যান’। রোহিত জানতেন, একজন ব্যাটার কম নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার ঝুঁকি নিচ্ছেন। কিন্তু তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে, দুবাইয়ের পরিবেশে বাড়তি ব্যাটারের প্রয়োজন পড়বে না। “কারও চোট-আঘাত না লাগলে, অতিরিক্ত ব্যাটার সুযোগ পাবে না বলেই মনে হয়েছিল। তা ছাড়া ঋষভ পন্থ রয়েছে টিমে। দুবাইয়ে টি-টোয়েন্টি লিগের ম্যাচ দেখছিলাম আমরা। সেখানেও স্লো বোলাররা অনেক বেশি সাফল্য পেয়েছিল।” ভারত অধিনায়কের প্রস্তুতি কতটা নিশ্ছিদ্র ছিল, বোঝা যাচ্ছে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.