স্টাফ রিপোর্টার: ক্লাব হাউসের লোয়ার টিয়ারে বছর চল্লিশের একজন বসে। ইডেনের বিভিন্ন স্ট্যান্ডের ছবি তুলছেন। তার মাঝেই কেকেআর আর পাঞ্জাব কিংস-দুটো টিমের প্র্যাকটিস দেখছেন। সঙ্গে তাঁর ৮১ বছরের পিতা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় কথা বলে যাচ্ছেন। ক্রিকেটমহলে ইনি অতীব পরিচিত মুখ। ইডেনের সঙ্গে অনেক স্মৃতিও জড়িয়ে তাঁর। ইংল্যান্ড টিমকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। ২০১২-তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। বর্তমানে কমেন্ট্রি বক্সে অতি পরিচিত মুখ।
তিনি- ঈশা গুহ।
কলকাতা শহরটার সঙ্গে তাঁর আত্মিক যোগ। ঈশার জন্ম থেকে বড় হয়ে ওঠা, সবটাই ইংল্যান্ডে। তবু এই শহরটার প্রতি তাঁর আলাদারকমের ভালোবাসা। ঈশার বাবা বরুণ গুহ এক সময় বেলেঘাটায় থাকতেন। ষাটের দশকে পড়াশুনোর জন্য তিনি ইংল্যান্ড চলে যান। লেখাপড়া শেষ করে চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে।
সারা বছর ধারাভাষ্যের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় ঈশাকে। আপাতত কয়েকটা দিন ছুটি। ঠিক করেন, পরিবার নিয়ে কলকাতায় আসবেন। দিন দু’য়েক আগে শহরে এসেছেন। বাঙালি খাবার-দাবারের প্রতিও অসম্ভব ভালোবাসা। বলছিলেন, “বাঙালি খাবার আমার খুব ভালো লাগে। আজ সকালে ঘুগনি খেলাম। গতকাল (বুধবার) রাতে ইলিশ মাছ খেয়েছি। চিংড়ি মাছ খাই। লুচি, মাংস- সবকিছুই ভালো লাগে।” শুক্রবার ঝুলনের সঙ্গে দেখা করবেন। শনিবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম পাঞ্জাব কিংস ম্যাচ দেখতেও আসবেন।
কেকেআর নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। তেমনই ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের প্রসঙ্গও এল। জুনে ইংল্যান্ড সফরে যাবে ভারতীয় টিম। সেখানে পাঁচ টেস্টের সিরিজ রয়েছে। যা নিয়েও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ঈশাকে। তিনি বলেন, “মহম্মদ শামি আর জশপ্রীত বুমরাহর ফিটনেসের উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। ভারতীয় দল যথেষ্ট ভালো। একইসঙ্গে মহম্মদ সিরাজের কথা বলব। আমার মনে হয়, ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ও সফল হবে। দুর্দান্ত একটা সিরিজ হতে চলেছে। তবে ওই সিরিজ নিয়ে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করব না।”
সাবলীলভাবে বাংলা বলতে পারেন না ঈশা। তবে বুঝতে পারেন। বলেন, “একটু-আধটু বলতে পারি। তবে বাংলা বুঝি।” ইডেনে ঝুলন গোস্বামী স্ট্যান্ড দেখে বেশ আপ্লুত। কুড়ি বছর আগের সেই স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছিল ঈশার। ইডেনের খেলার স্মৃতি। পাশ থেকে বাবা বলেন, “ওই ম্যাচে বেশ ভালো ব্যাট করছিল। ওর ক্যাচটা ধরে ঝুলনই।” পহেলগাঁওয়ের ঘটনা তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছে। শোকপ্রকাশ করে ঈশা বলেন, “যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের পরিবারের কথা ভাবছি শুধু। বুঝতে পারছি ওঁদের উপর দিয়ে কী যাচ্ছে। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.