সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চমবারের জন্য আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত। তৃতীয় খেতাব জিততে আর এক ধাপ পেরোতে হবে ভারতকে। রবিবারের মেগা ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ কে হবে, সেটা ঠিক হবে বুধবার। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা। খাতায়কলমে বেশি ফারাক নেই দুদলের। প্রায় সমান শক্তিধর দুই দেশের লড়াইয়ে কে এগিয়ে বলা মুশকিল।
বুধবারের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দিকে নজর থাকবে ভারতীয় দলেরও। খেতাবি লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ হিসাবে কাকে চাইবেন রোহিতরা? টিম ম্যানেজমেন্ট বলছে, প্রতিপক্ষ যে-ই হোক। আমরা প্রস্তুত। আর ক্রিকেট মহল দ্বিধাবিভক্ত। আসলে, খাতায়কলমে দুই দলই বেশ শক্তিশালী। ফর্মও একইরকম। তবে অনেকেই মনে করছেন, নিউজিল্যান্ডের থেকে প্রতিপক্ষ হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকাই বেশি সহজ হবে রোহিতদের জন্য।
এমনিতে নকআউট পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলাটা সত্যিই সহজ। কারণ প্রোটিয়ারা বরাবরের চোকার্স। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চাপের মুখে ব্যর্থ হওয়ার একটা প্রবণতা সবসময় তাদের মধ্যে লক্ষ্যনীয়। শুধু নকআউটে খেলার মানসিকতার নিরিখে দেখতে গেলে নিউজিল্যান্ড নিঃসন্দেহে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ। কিন্তু যদি খাতায়কলমে শক্তির বিচার করা হয় তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকাও এই মুহূর্তে বেশ শক্তিশালী। সেভাবে কোনও দুর্বলতাই চোখে পড়ে না প্রোটিয়া দলে। প্রোটিয়াদের টপ অর্ডারে বাভুমা, ভ্যান ডার ডুসেন, মার্করাম। মিডল অর্ডারে স্টাবস, ক্লাসেন, মিলারদের মতো ব্যাটার রয়েছেন। যারা দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। এদের মধ্যে স্টাবস, মার্করাম, ক্লাসেনরা দারুন স্পিনটাও খেলেন। দুবাইয়ের স্পিন সহায়ক পিচে সেটা বিরাট অ্যাডভান্টেজ। মাঝের ওভারগুলিতে স্পিনারদের দিয়ে উইকেট তুলে নেওয়াটা রোহিতদের মোক্ষম অস্ত্র। সেই অস্ত্র ভোঁতা করে দিতে পারেন মার্করাম, ক্লাসেনরা। আবার বোলিং বিভাগেও মহারাজ, শামসিদের মতো স্পিনার রয়েছেন। মার্করামও প্রয়োজনে স্পিন বোলিং করে দিতে পারেন।
তবে দুবাইয়ের পিচের হিসাবে দেখলে নিউজিল্যান্ড বেশি শক্তিশালী। শেষ ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে হার বাদ দিলে গোটা দল ভালো পারফর্ম করছে। ব্যাটিং বিভাগে রাচীন রবীন্দ্র, ইয়ং, উইলিয়ামসন, মিচেল, লেথামরা রয়েছেন। ফিল্ডিংয়ে এ পর্যন্ত কিইয়িরাই এই টুর্নামেন্টে সেরা। তাছাড়া ভারতের মতো নিউজিল্যান্ডেরও অন্যতম শক্তি স্পিন বোলিং। অধিনায়ক স্যান্টনার বরাবর ভোগান টিম ইন্ডিয়াকে। আবার ব্রেসওয়েলও ভালো ফর্মে। দরকারে গ্লেন ফিলিপস, রাচীন রবীন্দ্ররাও স্পিন করে দিতে পারেন। ফলে শক্তির নিরিখে কিউয়িরা দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে কম যান না। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল, চলতি টুর্নামেন্টে দুবাইয়ে এই ভারতের বিরুদ্ধেই একটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে তারা। ফলে ভারতের শক্তি-দুর্বলতা যেমন কিউয়িরা জেনে গিয়েছে, তেমনই দুবাইয়ের পিচ ও পরিস্থিতিও ভালোমতো বুঝে গিয়েছেন উইলিয়ামসনরা। সেদিক থেকে আবার দক্ষিণ আফ্রিকা আনকোরা। তাছাড়া গত ৪ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে পাকিস্তান থেকে দুবাই যেতে হয়েছে, আবার দুবাই থেকে পাকিস্তান ফিরতে হয়েছে। ফাইনালে উঠলে আবার দুবাইয়ে ফিরতে হবে তাদের। ফলে ক্লান্তিও একটা ছাপ ফেলতে পারে। তাছাড়া সদ্যই আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে ভারত। সে অভিজ্ঞতাও কাজে লাগবে।
সার্বিকভাবে দেখতে গেলে দুই দল প্রায় সমান শক্তিশালী। তবে প্রতিপক্ষ হিসাবে নিউজিল্যান্ড খানিকটা হলেও কঠিন ভারতের জন্য। তাছাড়া আইসিসি টুর্নামেন্টে কিউয়িদের বিরুদ্ধে অতীত রেকর্ড ভালো না টিম ইন্ডিয়ার। সেটাও মাথায় থাকবে। তবে শেষ চারে প্রতিপক্ষ যারাই হোক, ভারত দুই দলকেই সমান গুরুত্ব দেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.