আলাপন সাহা: বাংলাদেশ ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে থেকেই চর্চাটা শুরু হয়েছিল। মহম্মদ শামির সঙ্গে কে খেলবেন? হর্ষিত রানা নাকি অর্শদীপ সিং? প্র্যাকটিস দেখে যদিও মনে হয়েছিল, অর্শদীপ কিছুটা হলেও এগিয়ে। কিন্তু শেষমেশ হর্ষিতের উপরই ভরসা রাখে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হর্ষিতের অতিরিক্ত পেস কাজে লাগানোর ভাবনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত। কারণ বাংলাদেশ ব্যাটারদের বরাবরই শর্ট বল আর বাউন্সের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। গৌতম গম্ভীরদের সেই পরিকল্পনা কতটা সফল হয়েছে, সেটা ম্যাচের রেজাল্ট আর হর্ষিতের বোলিং পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে। শামির পাঁচ উইকেটের পাশাপাশি হর্ষিতের ঝুলিতে এসেছে তিন উইকেট।
ম্যাচের পর মিক্সড জোনে এসেছিলেন হর্ষিত। জিজ্ঞেস করা হয়, অর্শদীপের মতো পেসারকে বসিয়ে আপনাকে খেলানো হচ্ছে। তাতে বাড়তি চাপ থাকে আপনার উপর? ম্যাচের পর আগ্রাসী মেজাজে উত্তর দিয়ে গেলেন হর্ষিত। বলেন, “যদি অতিরিক্ত চাপ নিয়ে মাঠে নামি, তাহলে পারফর্মই করতে পারব না। তাই ম্যাচের সময় ওসব নিয়ে কিছুই ভাবি না। আমার যা কাজ, শুধু সেটার উপরই ফোকাস করি।” এটাও জিজ্ঞেস করা হয় যে কোচ-অধিনায়কের সাপোর্ট পাচ্ছেন, সেটা তো বড় ফ্যাক্টর। হর্ষিতের ছোট্ট উত্তর, “ওঁদের সাপোর্ট পাই, সেই জন্যই তো খেলতে পারছি।”
টিমের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ছিলেন। তবে সুযোগ আসছিল না। নেটে নিজেকে নিংড়ে নিতেন। কঠোর পরিশ্রম করতেন। যাতে সুযোগ এলে, তা কাজে লাগাতে পারেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন উইকেট নেওয়ার পর হর্ষিত বলছিলেন, “টিমের সঙ্গেই ছিলাম। কিন্তু সুযোগ আসছিল না। নেটে প্রচুর পরিশ্রম করতাম। আর সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। নিজেকে বলতাম, সুযোগ পেলে সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে।” চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুটা খুব ভালো হয়েছে, বাংলাদেশকে হারিয়ে। পরের ম্যাচই আবার ক্রিকেটীয় মহারণ। ভারত বনাম পাকিস্তান। যা নিয়ে দুবাইয়ে ভালোরকম আগ্রহ রয়েছে। ন্যূনতম টিকিটির দাম রাখা হয়েছে ৫০০ দিরহাম। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় বারো হাজার টাকা। আর সর্বোচ্চ দাম চার লাখ। ফাইনাল বাদ দিলে পুরো টুর্নামেন্টে টিকিটের দাম সবচেয়ে বেশি এই ভারত-পাক ম্যাচেই। যদিও ভারতীয় টিম পাকিস্তান বলে আলাদা কোনও চাপ নিতে চাইছে না। বরং নিজেদের আরও বেশি ফুরফুরে রাখার চেষ্টা করছে। কোচ গম্ভীর দিন কয়েক আগে একই কথা বলেছিলেন। হর্ষিতের গলাতেও কোচের কথার সুর। পাকিস্তান ম্যাচের প্রসঙ্গে উঠতেই বলে গেলেন, “ভালো লাগছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পারফর্ম করতে পেরে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই মোমেন্টাম নিয়ে নামতে পারব। পাকিস্তান অবশ্যই কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে আমরা পাকিস্তান ম্যাচকে আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই দেখছি। আলাদা কিছু নয়।”
জশপ্রীত বুমরাহ চোট না পেলে হয়তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলেই আসতেন না হর্ষিত। তবে সেই বুমরাহর পরামর্শ তাঁকে কতটা সাহায্য করেছে, সেটাও অকপটে বলে গেলেন তিনি। ভারতীয় পেসার বলছিলেন, “জাসসি ভাইয়ের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। কোন ফরম্যাটে কীরকম বল করতে হবে, সেটা জেনেছি। অস্ট্রেলিয়ায় এটা নিয়ে আলোচনা করতাম। কোন পরিস্থিতি কী করতে হবে, সেটা শিখেছি। ওঁর থেকে যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি শিখেছি, সেটা হল ধারাবাহিকতা। আপনাকে ভালো পারফর্ম করতে গেলে, ধারাবাহিক হতে হবে। জাসসি ভাই বারবার একটা কথা বলেন, এমনভাবে বল করতে হবে যাতে দলের বাইরে রাখার কথাই না ভাবতে পারে।” হর্ষিতকেও যে এখন কেউই দলের বাইরে রাখার কথা ভাবছেন না, বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.