Advertisement
Advertisement
KKR

অস্বস্তি বাড়ছে রাসেলকে নিয়ে! আইপিএলে কামব্যাকে নাইটদের ভরসা ২০১৪-র রূপকথা

পিচ নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে 'বাড়াবাড়ি' না করার বার্তা বোর্ডের?

IPL 2025: KKR CEO Venky Mysore believes that team can come back like 2014
Published by: Arpan Das
  • Posted:April 23, 2025 12:04 pm
  • Updated:April 23, 2025 4:26 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: কেকেআর কর্তারা সোমবার রাতে শুভমান গিলের গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে চূর্ণ-বিচূর্ণ হওয়ার পর শোনা গেল, টুঁ শব্দও আর করেননি! এত দিন ধরে নানা অভিযোগ, নানা ফরমায়েশ আসছিল। কখনও পিচ। কখনও মাঠের মাপ। কখনও অমুক। কখনও তমুক। লখনউয়ের বিরুদ্ধে ৪ রানে ইডেনে ম‌্যাচ হারার পর বাইশ গজ সিএবি-র এক পদাধিকারীকে ‘অভিনন্দন’-ও জানিয়ে গিয়েছিলেন কেকেআর কর্তাদের কেউ কেউ! কিন্তু সোমবার গুজরাতের কাছে চুরমার হওয়ার পর উপস্থিত নাইট কর্তাদের কেউ আর কিছু বলেননি। পরিচিত কেউ কেউ গিয়েছিলেন কথা-টথা বলতে। বলতে গিয়েছিলেন, ইডেনের এমন পিচে টস জিতে কেকেআর ব‌্যাট করে নিল না কেন? জবাবে নাকি কোনও সাড়া-শব্দ আসেনি!

আসবেও বা কী করে? যে মন্থর গতির টার্নার চেয়ে-চেয়ে এত দিন অভিযোগের কামান দেগে গিয়েছে কেকেআর, গিলদের বিরুদ্ধে যে সেই টার্নারেই খেলা ছিল। মরশুমে প্রথম বার। এবং তাতে ৩৯ রানে হেরে মুখ চুন করে টিমকে ফিরতে হয়েছে! না স্পিনার, না পেসার–কিছুই সামলাতে পারেননি কেকেআর ব‌্যাটাররা। সাই কিশোরকে খেলা যায়নি। রশিদ খানকে খেলতে গিয়ে কালঘাম ছুটে গিয়েছে। টাইটান্স পেসারদের মধ্যে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ চার ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে দু’উইকেট নিয়ে চলে গিয়েছেন। একমাত্র অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে বাদে কেকেআরের আর কাউকে দেখে মনে হয়নি, গুজরাটের মতো শক্তিশালী টিমের মহড়া নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে বলে। কুইন্টন ডি’ককের বদলে রহমনুল্লাহ গুরবাজকে খেলানোর স্ট্র্যাটেজি সম্পূর্ণ ব‌্যর্থ হয়েছে। ভেঙ্কটেশ আইয়ারের অবস্থা করুণ নয়, করুণতম! আন্দ্রে রাসেল প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁকে দিয়ে আর হচ্ছে না! স্মরণকালে এত অসহায় অবস্থায় কেকেআর কখনও আর পড়েনি। ভাবাই যাচ্ছে না, এই টিমটাই গত বার আইপিএল চ‌্যাম্পিয়ন হয়েছিল!

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে গল্ফ খেলতে গিয়েছিলেন অজিঙ্ক রাহানে, আনরিখ নখিয়া, টিম মেন্টর ডোয়েন ব্র্যাভোরা। ছিলেন নাইট সিইও ভেঙ্কি মাইসোরও। টিমের দুর্দশা নিয়ে প্রশ্ন করলে কেকেআর সিইও ২০১৪ এবং ২০২১-এর প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, ‘‘২০১৪ ও ২০২১ ভেবে দেখুন। সেই দু’বারও আমরা শেষ দিকে সব ম‌্যাচ জিতে প্লে অফ গিয়েছিলাম। টিমকে বিশ্বাস করি আমি। আমাদের ক্ষমতা আছে, আবার সেটা করে দেখানোর।’’ কথাটা শুনতে ভালো। কিন্তু কতটা যুক্তিপূর্ণ, সন্দেহ আছে। ২০১৪ সালেও প্রথম সাতটা ম‌্যাচের মধ্যে পাঁচটায় হেরেছিল কেকেআর। কিন্তু তার পর টানা ন’টা ম‌্যাচ জিতে চ‌্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু সেই টিমে একটা গৌতম গম্ভীর ছিলেন। আগুনে ফর্মে থাকা রবিন উথাপ্পা ছিলেন। টপ ফর্মের মণীশ পাণ্ডে ছিলেন। আন্দ্রে রাসেলকে দেখে তখন ভয় পেত বিপক্ষরা। ২০২১ সালে কেকেআর ফাইনাল খেলার নেপথ্যে ছিলেন বিধ্বংসী ক্রিকেট খেলা এক নবাগত তরুণ–যাঁর নাম ভেঙ্কটেশ আইয়ার! যিনি আত্মপ্রকাশেই ছারখার করে দিয়েছিলেন বিপক্ষকে। এবার কে হবেন ২০২১ সালের ভেঙ্কটেশ আইয়ার? কে-ই বা হবেন ২০১৪-র উথাপ্পা? রাসেল আছেন আজও। নারিনও আছেন। কিন্তু বয়স হচ্ছে তাঁদের। ২০১৪-র রাসেল আর ২০২৫ সালের রাসেল, কখনও এক হল? মাঝে যে এগারো বছর চলে গিয়েছে, কেকেআর কর্তাকে কে বোঝাবে?

বরং রভম‌্যান পাওয়েলকে না খেলানো নিয়ে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল নাইট অধিনায়ককে। রাহানে বলে গেলেন, ‘‘মাঠ আর পরিস্থিতি বিচার করে আমরা প্রথম একাদশ নির্বাচন করি। সেই কম্বিনেশনে জোর দিতে গিয়েই পাওয়েলকে খেলানো যায়নি।’’ কত দিন যে কম্বিনেশনের দোহাই দিয়ে পাওয়েলকে বসিয়ে রাখা হবে, কে জানে। ইডেন পিচ নিয়ে আবার অস্বস্তিজনক প্রশ্ন ধেয়ে গেল ব্র্যাভোর কাছে। প্রাক্তন ক‌্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার যদিও পরিষ্কার বলে দিলেন, “পিচ নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। আমরা ভালো খেলতে পারিনি, সেটাই আসল।”

যা খবর, পিচ নিয়ে নতুন গাঁইগুঁই করার বিশেষ সুযোগও আর নেই ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। শোনা গেল, ঘরের মাঠের পিচ, হোম অ‌্যাডভান্টেজ, ইত‌্যাদি নিয়ে যে সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রকাশ‌্যে অভিযোগ করেছিল, বোর্ডের তরফে নাকি তাদের ইতিমধ্যে কড়া বার্তা দিয়ে দেওয়া হয়েছে! বলে দেওয়া হয়েছে, পিচ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে। কারণ, যাঁদের নিয়ে বলা হচ্ছে, তাঁরা প্রত‌্যেকে বোর্ড নিযুক্ত কিউরেটর। কেউ কেউ বললেন, কেকেআরও ফোন পেয়ে গিয়েছে বোর্ডের। যে কারণে গুজরাত ম‌্যাচের পিচ নিয়ে বিশেষ দাবিদাওয়া পেশ করা হয়নি আর। বাইশ গজ নিয়ে সার্বিক অভাব-অভিযোগও দেখা যাচ্ছে, আগের চেয়ে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে। তা হলে হঠাৎ গুজরাত ম‌্যাচের পিচে টার্নের বন্দোবস্ত করা হল কেন?

শোনা গেল, কেকেআর যেহেতু দফায় দফায় বাইশ গজ নিয়ে অভিযোগ করে গিয়েছে, তাই তাদের পছন্দের পিচ দিয়ে চ‌্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহলের কেউ কেউ চিন্তায় যে, এ ধরনের পিচ করে শেষ পর্যন্ত না সেরা মাঠের পুরস্কার হাতছাড়া হয়ে যায় ইডেনের! সাফ বলা হল, কেকেআর ঝুলোঝুলি না করলে এ রকম মন্থর প্রকৃতির পিচ করাই হত না। আইপিএলের গ্রুপ পর্বের ম‌্যাচ দেখে সেরা মাঠের পুরস্কার ঠিক করা হয়। টাইটান্স ম‌্যাচের বাইশ গজ দেখার পর সে পুরস্কার কি আর ইডেনের ভাগ্যে জুটবে?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement