আলাপন সাহা: শনিবার ইডেনে দু’দল মিলিয়ে ক্রিকেটারের সংখ্যা তিরিশির বেশিই হবে। দু’টো দল মিলিয়ে তারকারও অভাব নেই। অজিঙ্ক রাহানে, সুনীল নারিন, আন্দ্রে রাসেল, সিমরন হেটমেয়ার, জোফ্রা আর্চার, যশস্বী জয়সওয়াল। কিন্তু শহরবাসীর সে’সব নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। বরং সব আকর্ষণ যেন একজনকে ঘিরে। রাজস্থান রয়্যালস ইডেন ছাড়ার সময় সিএবি’র এক কর্তা পড়িমরি করে ছুটে এলেন, ‘একবার একটু বৈভব সূর্যবংশীকে দেখব।’
বয়স চোদ্দার একটু বেশি। গোঁফের রেখা এখনও স্পষ্ট হয়নি। মুখে সারল্যভরা একটা হাসি সবসময় লেগে রয়েছে। গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী সেঞ্চুরির পর শুধু ভারতীয় ক্রিকেটে নয়, বিশ্ব ক্রিকেটে চর্চা চলছে বিহারের বিস্ময় বালককে নিয়ে। ইডেনে ঢোকার সময় যেভাবে বৈভব… বৈভব চিৎকার চলছিল, অপার বিস্ময়ে বারবার তাকাচ্ছিল। তবে রাজস্থান শিবির যতটা সম্ভব এসব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে বৈভবকে। সেই নির্দেশ এসেছে স্বয়ং গুরু রাহুল দ্রাবিড়ের কাছ থেকে।
শোনা গেল, গুজরাতের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরির পরই দ্রাবিড় বুঝে গিয়েছিলেন, ক্রিকেট মহলে হইচই শুরু হবে বৈভবকে নিয়ে। মিডিয়া থেকে শুরু করে সমর্থক, সবাই প্রচারের স্পটলাইটে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে। কিন্তু বৈভবকে এসবের থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। ‘সংরক্ষণ’ করতে হবে তরুণ প্রতিভাকে। প্র্যাকটিস শেষে ইডেন ছেড়ে যখন বৈভব যখন বেরোচ্ছে, অনেকেই চেষ্টা করছিলেন একটা সেলফি তোলার। কেউ কেউ আবার অটোগ্রাফের জন্য আবদার করছিলেন। বৈভবকে নিয়ে রাজস্থানের টিমের এক স্টাফ সঙ্গে নিয়ে সবার আগে বেরিয়ে দ্রুত বাসে ছেড়ে আসেন। গুজরাট ম্যাচের পরই নাকি একটা নির্দেশ চলে এসেছিল বাস থেকে নেমে বৈভবের মাঠে ঢোকা থেকে শুরু করে মাঠ থেকে বেরোনো পর্যন্ত, সবসময় টিমের একজনকে থাকতে হবে। কোনওভাবেই একা ছাড়া যাবে না তরুণ এই প্রতিভাকে। শনিবার ইডেনে বারবার গুরু-শিষ্যকে এক ফ্রেমে ধরার চেষ্টা করছিল ক্যামেরা।
বৈভবের সাফল্যের পিছনে গুরু দ্রাবিড়ের ভূমিকাও তো কম কিছু নয়। শোনা যায়, আইপিএল নিলামে তাঁকে টিমে নেওয়া শুরু থেকে করে নেটে ‘পরিচর্চা’ করা, সবকিছুর নেপথ্যে গুরু দ্রাবিড়। একটা সময় ভারতীয় অনূর্ধ্ব উনিশ টিমের কোচ ছিলেন। দ্রাবিড়ের গুরুকুল থেকে শুভমান গিলের মতো তরুণের উঠে আসা। আইপিএলের আগেই পায়ে চোট পেয়েছিলেন। হাতে ক্র্যাচ নিয়ে হাটছেন। সেভাবেই ইডেনে একটার পর একটা নেটে ঘুরলেন। কখনও বৈভবের ব্যাটিংয়ের সময়, কখনও আবার নীতীশ রানাকে নেটে টুকটাক কিছু পরামর্শ দিলেন। বৈভব নিজেও গুরু দ্রাবিড়ের পরামর্শ একেবারে অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে। বেশিরভাগ সময়টাই পড়ে থাকছে দ্রাবিড়ের গুরুকুলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.