মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ২১৭/২ (রিকেলটন ৬১, রোহিত ৫৩, রিয়ান ১/১২)
রাজস্থান রয়্যালস: ১১৭/১০ (জোফ্রা আর্চার ৩০, কর্ণ শর্মা ৩/১২, বোল্ট ৩/২৮)
১০০ রানে জয়ী মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরপর ম্যাচ জিতলে একটা বাড়তি অক্সিজেন মেলে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে দেখলে সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যায় ঘরের মাঠে রাজস্থানকে তাদের কার্যতই গুঁড়িয়ে দেওয়া দেখলে বোঝা যায় রোহিতদের আত্মবিশ্বাস এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে। মায়ানগরীর ক্রিকেট দল যে এবারের আইপিএলে অন্যতম ফেভারিট হয়ে উঠেছে তা বললে অত্যুক্তি হবে না। পরপর ছয় ম্যাচ জিতে তারাই এখন লিগ টেবিলের শীর্ষে। নেট রানরেটও আকাশছোঁয়া! প্লে অফে যাওয়ার কার্যত নিশ্চিতই হয়ে গেল এদিনের জয়ে। অন্যদিকে এদিন ঘরের মাঠে কুৎসিত হারের পর সব অঙ্ক থেকেই সরে গেল রাজস্থান। প্লে অফের দৌড় থেকে পাকাপাকি ভাবেই ছিটকে গেল তারা।
এদিন টসে জিতে রাজস্থান ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু প্রায় শুরু থেকেই ঝড় তোলেন মুম্বইয়ের দুই ওপেনার। বিশেষ করে ধুলোঝড় ওঠার পর। পরপর পাঁচটি ম্যাচ জেতার পর দলটার শরীরী ভাষাই যেন বদলে গিয়েছে। গত কয়েক ম্যাচের মতোই এদিনও রোহিতকে দেখে উল্লাসে মাতলেন দর্শকরা। সেই চেনা মেজাজ, অনায়াস ছন্দে জয়পুরের মাঠে অর্ধশতক করে গেলেন ‘শর্মাজি কা বেটা’। এবারের আইপিএলে এটা তাঁর তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। অন্যদিকে রিকেলটনও ছিলেন মেজাজে। রোহিত করলেন ৩৬ বলে ৫৩। ছক্কা নেই, কিন্তু বাউন্ডারি মারলেন ৯টি। রিকেলটন ৩টি ছক্কা ও ৭টি বাউন্ডারিতে করে গেলেন ৩৮ বলে ৬১। ওপেনিং জুটি ভাঙল ১১৬ রানে। খানিক পরেই সাজঘরে রোহিতও। স্কোর তখন ১২৩/২। চলছে ত্রয়োদশ ওভার। দু’শোর নিচে মুম্বইকে থামানো যাবে না এটা ততক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। শেষপর্যন্ত সূর্যকুমার যাদব (অপরাজিত ৪৮, ৪x৪, ৩x৬) এবং হার্দিক পাণ্ড্য (অপরাজিত ৪৮, ৬x৪, ১x৬) স্কোর নিয়ে গেলেন ২১৭ রানে। তখনই বোঝা গিয়েছিল রাজস্থানের কাজটা সহজ হবে না।
মাত্র ১৪ বছরেই আইপিএলে সেঞ্চুরি। তাও ৩৫ বলে। আগের ম্যাচে বৈভব সূর্যবংশীর ‘অবিশ্বাস্য’ পারফরম্যান্সের পর এদিনও তার দিকেই চোখ ছিল সকলের। কিন্তু কিশোর ফিরল দুই বলের মধ্যেই। আগের দিনের শতরানের পর এদিন নামের পাশে শূন্য নিয়ে। ক্রিকেট যে আসলে জীবনেরই আরেক প্রতিচ্ছবি, ওঠানামার নিরন্তর রোলার কোস্টার তা হয়তো এদিন বুঝে গেল বৈভব। যশস্বী শুরু করেছিলেন ভালো। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে কভারের উপর দিয়ে ছক্কা। এক বল পরে অফস্টাম্পের বাইরের বলকে ক্রস টেনে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে দিলেন। ট্রেন্ট বোল্টকে নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওভারের চতুর্থ বলেই পুল করতে গিয়ে বোল্ড জয়সওয়াল। এগিয়ে গিয়ে কিউই পেসার যা বললেন তা নিশ্চয়ই তৎসম নীতিবাক্য নয়।
নীতীশ রানা ও রিয়ান পরাগ প্রাথমিক ঝটকা সামলে জুটি বাঁধতে চাইছিলেন। কিন্তু চতুর্থ ওভারের শেষ বলে নীতীশ ফিরতেই (৯) পরপর উইকেট পড়া শুরু হল। রিয়ান (১৬), হেটমেয়ারকে (০) হারিয়ে রাজস্থান এসে দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৪৭ রানে। ম্যাচ কোনদিকে গড়াচ্ছে তা বুঝতে এরপর আর ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। শিবম দুবে (১৫) শুরুটা ভালোই করলেন। চার-ছয় মারলেন বটে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। হার্দিকের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে লং অনে সহজ ক্যাচ তুলে ফিরে গেলেন। খানিক বাদে ধ্রুব জুড়েলও (১১) আউট। এরপর ম্যাচটা হয়ে দাঁড়ায় নেহাতই নিয়মরক্ষার। জোফ্রা আর্চার (৩০) একটা ক্ষীণ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কখনও মনে হয়নি কোনওরকম অঘটন ঘটানোর ইচ্ছে তাঁর নিজেরও আছে বলে। শেষপর্যন্ত ১১৭ রানেই অলআউট হয়ে গেল রাজস্থান। ১০০ রানে ম্যাচ জিতে মুম্বই বজায় রাখল তাদের সোনার দৌড়। তাদের কিন্তু চ্যাম্পিয়নের মতো দেখাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.