আশা ভোঁসলে: শচীনের ব্যাটিং যেন লতা মঙ্গেশকরের গানের মতোই– চিরন্তন, চিরকালীন। খেয়াল করে দেখবেন, জীবনের প্রায় প্রত্যেকটা অনুভূতির সঙ্গেই মিলে যায় লতা মঙ্গেশকরের কোনও না কোনও গান। একইভাবে, যে কোনও পরিস্থিতিতে ও ফরম্যাটে শচীনের ব্যাটিং চোখ জুড়িয়ে দেয়। কী অবলীলায় ও নিজেকে নানা পরিস্থিতির সঙ্গে আত্মস্থ করে নিতে পারে। দিনের যে কোনও সময় লতাদিদির গান শুনতে আপনার যেমন ক্লান্তিবোধ হবে না, শচীনের ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তাই শচীন হল ক্রিকেটের সর্বোত্তম শিল্পী।
ভিভের আক্রমণাত্মক মনোভাব আর গাভাসকরের আভিজাত্যের অনবদ্য মিশেল হল শচীন। এমন একজন যে নিজের ক্লাস আর আভিজাত্যের চমৎকার ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। ওর যখন বছর পনেরো বয়স, তখন থেকে ওর কথা শুনছি। রাজ সিং দুঙ্গারপুর ওর কথা প্রথম বলেন। শুনলাম, মুম্বইয়ের একটা ছেলে দারুণ খেলছে। এ-ও শুনলাম যে গাভাসকর নাকি তাকে প্যাড উপহার দিয়েছে। কৌতূহল বাড়ল। তারপর ১৯৮৯-তে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওকে খেলতে দেখলাম। সেদিন ওর খেলা দেখেই বুঝলাম, শচীন এক বিরল প্রতিভা। আর তারপর ভারতবর্ষ পেয়ে গেল এমন একজনকে যার তুলনা করা যায় স্যর ডন ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে!
দেখুন, মৃত্যু ছাড়া শিল্পীর অবসর হয় না। নব্বই বছর বয়সেও তাই পারফর্ম করি। শচীনও আজীবন সেই কাজ করে গিয়েছে। কোটি কোটি মানুষকে ও আনন্দ দিয়েছে ওর শিল্পের মাধ্যমে। আসলে শচীন নিজেই একটা উৎসব। বছরে একাধিকবার যে উৎসবে আমরা শামিল হতে পারি। এখানে একটা কথা বলি। শচীন এক ডাকে আমার অনুষ্ঠানে এসে কিন্তু একটা পয়সাও নেয়নি। একবার জানতে চেয়েছিলাম, তুমি কী নেবে? বলেছিল, কিছু একটা ব্যক্তিগত জিনিস দিন। আমি তখন আমার খাতার যে-পাতায় ‘আঁখো কি মস্তি’ গানটা লিখেছিলাম, সেই পাতাটাই ওকে ফ্রেমে বাঁধিয়ে উপহার দিয়েছিলাম। বলেছিল, এটা ও ঘরে যত্ন করে তুলে রাখবে। শুনে আমি খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। এটাই তো শচীন!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.