Advertisement
Advertisement
Shakib Al Hasan

‘ভোটে দাঁড়ালে আবার জিতব’, রাজনীতিতে আসা নিয়ে আক্ষেপ নেই ‘দেশছাড়া’ শাকিবের

মাত্র ছ'মাসের রাজনৈতিক কেরিয়ারেই ওলট-পালট শাকিব আল হাসানের জীবন।

Shakib Al Hasan confident of winning election in Bangladesh

ফাইল ছবি।

Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:April 16, 2025 7:07 pm
  • Updated:April 16, 2025 7:07 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও নিজের সিদ্ধান্তকে এখনো সঠিক বলে মনে করছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। নির্বাচনে অংশ নিলে আবারও জিতবেন, এমন বিশ্বাস তাঁর। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সান-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শাকিব বলেন, “যদি আমার রাজনীতিতে আসাটা ভুল হয়, তাহলে যেকোনো নাগরিকের জন্য রাজনীতিতে আসাটাই ভুল হয়ে দাঁড়ায়। এটা তো কারও একার ক্ষেত্র না—চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী সবাই চাইলে রাজনীতিতে আসতে পারেন। মানুষ ভোট দেবে কি দেবে না, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি, আমি তখনও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এখনো তাই মনে করি-কারণ আমার উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কিছু করা। আমি বিশ্বাস করি, আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারি এবং তারা আমাকে সেটা করতে দিতে চেয়েছিল। ”

শাকিব আরও বলেন, “আমার আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলেই বিশ্বাস করি। আজ যদি আমি আবার নির্বাচন করি, কেউ মনে করে না আমি হারব। কাজেই, আমার মনে হয় না আমি কোনো ভুল করেছি। আমি চেয়েছিলাম মানুষের জন্য কাজ করতে, সুযোগ চেয়েছিলাম, মানুষ আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছিল। হ্যাঁ, দুর্ভাগ্যবশত আমি যেভাবে কাজ করতে চেয়েছিলাম, সেভাবে পারিনি। এটা আমি স্বীকার করি। ” শাকিব মনে করেন, দেশের জন্য বড় পরিবর্তন আনতে হলে সিস্টেমের ভেতরে ঢুকতে হয়। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় যদি আপনি সিস্টেম পরিবর্তন করতে চান, তাহলে আপনাকে সিস্টেমের ভেতরে ঢুকতেই হবে। বাইরে থেকে তো পরিবর্তন সম্ভব না। যারা এখন দেশ চালাচ্ছেন, তারা কি বাইরে থেকে এই পরিবর্তন আনতে পারতেন? আপনি বলুন, এটা কি পরিষ্কার না? অনেকে হয়তো বলবে আমি রাজনীতিতে এসে ভুল করেছি। কিন্তু যারা এসব বলছে, তাদের বেশিরভাগই আমার এলাকার ভোটার না। মাগুরার ভোটাররা কিন্তু অন্যভাবে ভাবে। আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, নির্বাচন করেছিলাম। মানুষ যদি চায়, আমাকে ভোট দেবে। না চাইলে দেবে না। এত সহজ বিষয়। বাইরের মানুষ কী বলছে, তাতে আমার এলাকার পরিস্থিতি তো বদলাবে না। ”

Advertisement

শাকিব স্বীকার করেছেন, নির্বাচনের পর তিনি রাজনীতিতে যথেষ্ট সময় দিতে পারেননি। তিনি বলেন, “আমি ছ’মাস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তার মধ্যে মাত্র তিন দিন মাগুরায় গিয়েছি। বাকি সময় ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, দেশের বাইরেও ছিলাম। সে কারণে রাজনীতির মাঠে সক্রিয়ভাবে থাকতে পারিনি। ” তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শেই রাজনীতির চেয়ে ক্রিকেটে বেশি মনোযোগ দিয়েছিলেন বলেন জানান শাকিব। তাঁর কথায়, “তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, ‘রাজনীতি করতে হবে না, শুধু ক্রিকেটে মন দাও। ‘ আমি সেই কথাই অনুসরণ করেছি। আমার কোনো গোপন অ্যাজেন্ডা ছিল না। আমি সবসময়ই মনে করেছি, যতদিন খেলছি, খেলাটাই আমার অগ্রাধিকার। চাইলে আমি খেলা ছেড়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে নামতে পারতাম। কিন্তু আমার পরিকল্পনা ছিল ধাপে ধাপে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া-চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার পর ধীরে ধীরে বিষয়টা বুঝে মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছা ছিল। ”

শাকিব বলেন, “আমি হুট করে রাজনীতিতে ঝাঁপ দিইনি। আমি সিস্টেমের মধ্যে থেকেই শুরু করতে চেয়েছিলাম। মানুষ কী ভাবছে, সেটা তাদের ব্যাপার। যদি আমার সিদ্ধান্ত ভুল হয়ে থাকে, তাহলে যারা এখন ক্ষমতায় আছে, তারাও একদিন থাকবে না। ১০ বছর হোক বা ২০ বছর, কেউ চিরকাল একই জায়গায় থাকে না। আবার অন্য কেউ আসবে, তারাও থাকবে না। এই চক্র তো চলতেই থাকবে। আসল বিষয় হলো, আমাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন দরকার। মানুষের দুটি মৌলিক অধিকার—ভোট দেওয়ার অধিকার ও যেকোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার অধিকার। আপনি যদি মনে করেন সিস্টেমটা ভুল, তাহলে আপনি একা কীভাবে সেটা পরিবর্তন করবেন? কতদিন পারবেন একা করে যেতে? একসময় না একসময় সবার সাহায্য দরকার হয়। সবাই একসঙ্গে কাজ করলেই প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব।” মাত্র ছ’মাসের রাজনৈতিক কেরিয়ারেই ওলট-পালট শাকিব আল হাসানের জীবন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শাকিবের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা। সামনে এসেছে তাঁর দুর্নীতির খবরও। দেশে ফেরাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাঁর। সূত্রের খবর, আমেরিকার নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা করছেন শাকিব।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement