সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: থমথমে গোটা স্টেডিয়াম। টেনশনে গোটা দেশ। সমর্থকরাও চিন্তিত। হাওয়ায় উড়ছে বল। পিছনে দৌড়চ্ছেন এক ভারতীয় তরুণ। যেন অবিকল একই দৃশ্য। একটা ১৯৮৩ সালের। সেদিনের সেই ভারতীয় তরুণের নাম ছিল কপিল দেব নিখাঞ্জ। আরেকটা দৃশ্য ৪১ বছর বাদে। ২০২৪ সালের। এবারের ভারতের তরুণের নাম সূর্যকুমার যাদব।
মদনলালের বলটা শূন্যে তুলে মেরেছিলেন ভিভ রিচার্ডস! ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার। ঠিকঠাক ব্যাটে বলে হয়নি। বল শূন্যে। আর তা দেখেই বলের দিকে তাকিয়ে ছুটতে শুরু করে দিলেন ভারত অধিনায়ক কপিল দেব (Kapil Dev)। প্রায় ৩০ গজ দৌড়ে অসম্ভব একটা ক্যাচ ধরলেন কপিল। আর ওই ক্যাচই গড়ে দিল ম্যাচের ভাগ্য। ১৯৮৩ সালের সেই মুহূর্ত এখনও ভুলতে পারেনি গোটা দেশ। রিচার্ডস ফিরতেই ভারতীয়রা রক্তের স্বাদ পেয়ে যায়। বাকিটা ইতিহাস। লর্ডসের বারান্দায় বিশ্বকাপ হাতে তোলেন কপিল।
৪১ বছর বাদে। আরও একটা বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2024 Final) ফাইনাল। বিশ্বজয় আর ভারতের মাঝে দাঁড়িয়ে ডেভিড মিলার। এক ওভারে মাত্র ১৬ রান পুঁজি। মিলারের মতো ব্যাটারের পক্ষে যা মোটেই অসম্ভব নয়। হার্দিক পাণ্ডিয়ার প্রথম বলই শূন্যে ভাসিয়ে দিলেন বাঁহাতি প্রোটিয়া ব্যাটার। বল ছুটল বাউন্ডারির দিকে। ছুটলেন আরেকজন সূর্যকুমার যাদব (Surya Kumar Yadav)। লং অন থেকে বাউন্ডারির দিকে। বল লুফে নিলেন বটে, কিন্তু নিজের গতি নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে! এক চুল এদিক ওদিক হলেই তো উইকেটের বদলে স্কোরবোর্ডে লেখা হবে ছক্কা। সেই সঙ্গে সম্ভবত ট্রফিতেও লিখে ফেলা হবে দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। কিন্তু সূর্য একচুলও এদিক-ওদিক হলেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন। বাউন্ডারির বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বল উড়িয়ে দিলেন। সীমানার ভিতরে প্রত্যাবর্তন করে ফের লুফে নিলেন সেই বল। মুহূর্ত যেন থেমে গেল। ওই মুহূর্তেই যেন ট্রফিতে লেখা হল ভারতের নাম।
সূর্যর ওই ক্যাচ হয়তো আরও একটি মুহূর্তের কথা মনে করাবে ভারতীয় সমর্থকদের। ২০০৭ বিশ্বকাপের ফাইনাল। শেষ বলে স্কুপ মারতে গিয়ে শূন্যে বল ভাসিয়েছিলেন মিসবা উল হক। সেই ক্যাচটি লুফে নিয়েছিলেন শান্তাকুমারন শ্রীসন্থ। সেদিনের ক্যাচের থেকে আজকের সূর্যর ক্যাচ অনেকটাই কঠিন ছিল। কিন্তু আবেগের জায়গাটা বোধহয় একই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.