স্টাফ রিপোর্টার: ১ আগস্ট ২০১৯। শততম বর্ষে পা রাখবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। সেদিনের অনুষ্ঠানে মজিদ বাসকারকে আনার প্রক্রিয়া শুরু করলেন লাল-হলুদ কর্তারা।
ইস্টবেঙ্গলে খেলেছেন মাত্র দু’বছর। তাতেই যেন মিথ হয়ে গিয়েছেন ইরানি ফুটবলার। অথচ মাঠের বাইরের বিভিন্ন কারণে ভারতে তাঁর কেরিয়ার লম্বা হয়নি। সবার অলক্ষ্যে ফিরে গিয়েছেন দেশে। বলা ভাল কলকাতা থেকে খুররামশারে গিয়েছে মজিদের শরীর। কিন্তু তাঁর অদৃশ্য উপস্থিতি প্রবলভাবে রয়ে গিয়েছে ময়দানের আনাচে-কানাচে। মরীচিকা হয়ে যাওয়া সেই মজিদই হঠাৎ করে প্রকাশ্যে এসেছেন সংবাদ প্রতিদিন-এর মাধ্যমে। তারপর যা হওয়ার ছিল, হল ঠিক তেমনটাই। অজানা দেশে হারিয়ে যাওয়া তারার সন্ধান পেয়ে সবার সামনে তাঁকে আনার কাজ শুরু হয়ে গেল লেসলি ক্লডিয়াস সরণিতে। ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলছিলেন, “বর্তমান প্রজন্ম জানে না মজিদ কী ছিল। ওর সঙ্গে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করেছি। লাভ হয়নি। এবার যখন সুযোগ এসেছে, হাতছাড়া করব না। তবে কীভাবে কী হবে, পুরোটাই আলোচনার পর্যায়ে। দেখা যাক, কী হয়!”
মজিদ বাসকারের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ময়দান জুড়ে যেন নস্ট্যালজিয়া। মজিদের প্রাক্তন কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে তাঁর কোচিংয়ে খেলা অন্যতম সেরা প্রতিভা ছিলেন ইরানিয়ান তারকা। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি পিকে বললেন, “মজিদ এখনও আমার কথা মনে রেখেছে সেটা ভেবেই আমি খুশি। ওর মতো স্টুডেন্ট খুব একটা পাইনি। আমার কোচিংয়ে খেলা অন্যতম সেরা প্রতিভা ছিল মজিদ।”
মজিদের এক সময়ের সতীর্থরাও তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মজিদ যাঁকে ‘ক্যাপ্টেন’ বলে ডাকতেন সেই মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছিলেন, “মজিদ কত বড় ফুটবলার ছিল, সেটা হয়তো নিজেই জানত না। কত দুর্দিনে ও একা ম্যাচ ঘুরিয়েছে! এখনও কানে বাজে, শুধু বলত, ক্যাপ্টেন ডোন্ট ওরি। বুঝে যেতাম আমায় শুধু ডিফেন্স সামলাতে হবে। বাকি মজিদ করে দেবে। হতও তাই।” মজিদের সঙ্গে মহামেডানে খেলা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “বিশ্বাসই হচ্ছে না মজিদ আমার কথা মনে রেখেছে। আমরা একসঙ্গে মহামেডানে খেলেছিলাম। আমি ক্যাপ্টেন ছিলাম। মনে আছে হায়দরাবাদে একটা টুর্নামেন্টে মজিদ সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিল। ওর মতো ফুটবলার খুব কম এসেছে ভারতীয় ফুটবলে। ও যদি কলকাতায় আসে তা হলে দেখা করব। হাওড়ায় আমি মজিদকে সংবর্ধনাও দিতে চাই।”
[লিগ লড়াইয়ে ধাক্কা, চেন্নাই সিটির কাছে হার ইস্টবেঙ্গলের]
নস্ট্যালজিয়ার মধ্যে আবার ছড়িয়ে থাকল আক্ষেপের সুরও। মনোরঞ্জন যেমন বললেন, “মজিদ, খাবাজি আর জামশিদ থাকত লর্ড সিনহা রোডের একটা ফ্ল্যাটে। অভিজাত এলাকায় নিজেদের আটকে রাখতে পারল না। ক্লাব যদি আরও একটু আগলে রাখত ওদের, তাহলে মজিদকে এভাবে হারাতে হত না।” তবে শেষমেশ মজিদ যদি ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে আসেন, তাহলে শতবর্ষে এর থেকে ভাল উপহার কিছু হতে পারে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.