সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যোগ্যতা অর্জন পর্বে দেশের জার্সি গায়ে পাঁচটি গোল করেছিলেন। আর সেই সৌজন্যে ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে বিশ্বকাপে আরও একবার খেলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল মিশর। দলকে এমন সাফল্য এনে দেওয়ার পর থেকেই তিনি ছিলেন ফুটবলবিশ্বের চর্চার শীর্ষে। ক্লাবের হয়ে প্রিমিয়ার লিগের বর্ষসেরা তারকা দেশের মুখেও হাসি ফুটিয়েছিলেন। কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁর ভয়ংকর চোট। আর তাই চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেই মুখ থুবড়ে পড়তে হল তাঁর দলকে। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নজির গড়েও মন ভাল নেই তাঁর। তিনি মহম্মদ সালাহ।
যতই হোম ফেভারিট হোক রাশিয়া, মঙ্গলবার ফুটবলপ্রেমীরা রাত জেগেছিলেন ‘মিশরীয় মেসি’র ক্যারিশমার সাক্ষী হতে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি নিয়ে যত মাতামাতিই থাক না কেন, সালাহর প্রতিভার প্রতি আলাদারকম একটা দুর্বলতা তৈরি হয়েছে ফুটবলভক্তদের। তাই মিশরকে দল হিসেবে প্রথম সারিতে না রাখলেও শুধু সালাহর টানে পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল দেশটি। তিন গোল হজম করার পর পেনাল্টি থেকে সালাহ একটি গোল করলেন ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। গ্রুপ পর্ব থেকেই কার্যত ছিটকে গেল সালাহর মিশর। সেই সময় লিভারপুলের নিজের ব্রাজিলীয় সতীর্থকে রবার্তো ফিরমিনোর অভাব নিশ্চয়ই অনুভব করেছিলেন তিনি। কারণ এই দলে তাঁকে বল বাড়ানোর তেমন কেউ নেই। তাই সুযোগ তৈরি হলেও ফিনিশ হল না। সমুদ্রের ঢেউয়ে বালির ঘর যেমন ভেসে যায়, সেভাবেই রাশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে নিশ্চিহ্নের পথে মিশর।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালটা তাঁর কাছে অভিশপ্ত হয়েই রয়ে গেল। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার সের্জিও ব়্যামোস যদি সেদিন ওভাবে ট্যাকল না করতেন সালাহকে, তাহলে হয়তো বিশ্বকাপের ছবিটা অন্যরকম হতে পারত। গুরুতর চোট না পেলে হয়তো উরুগুয়ের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠতে পারতেন সালাহ। দল হয়তো আরও আত্মবিশ্বাসী মনোভাব নিয়ে খেলত। রাশিয়ার কাছে পরাস্ত হওয়ার পর মনকে এসব সান্ত্বনাই দিচ্ছেন সালাহর ভক্তরা। তবে ফলাফল যাই হোক না কেন, মিশরের ফুটবল ইতিহাসে সালাহর নাম যে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রইল, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ তৃতীয় মিশরীয় তারকা হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করার নজির গড়লেন তিনি। ১৯৩০ সালে আবেদ এল ঘানি এবং ১৯৩৪ বিশ্বকাপে আবদেলরহমান ফাওজির পর দেশের জার্সি গায়ে বিশ্ব মঞ্চে গোলের ইতিহাস রচনা করলেন সালাহই। সাতটি মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নরা এই নিয়ে তৃতীয়বার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেল। তবে সে সফর খুব একটা দীর্ঘ হল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.