জোস ব্যারেটো: হয়তো আমাদের জন্য ভালোই হল। কিন্তু ব্রাজিল ফুটবলকে টেনে তোলার জন্য জাতীয় দলের কোচ করে নিয়ে আসা হল একজন ইউরোপিয়ানকে। এরকমটা দেখতে আমরা এতদিন অভ্যস্ত ছিলাম না। আমাদের দেশ পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আর পাঁচবারই আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি নিজেদের দেশের কোচ নিয়েই। এমনকী এখনও পর্যন্ত যে দেশগুলি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তারাও কোনওদিন বিদেশি কোচ নিয়ে জেতেনি। সেখানে আমরা ব্রাজিল, যাদের দেখে এখনও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ফুটবল খেলা শুরু করে, সেই দেশই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য কোচ নিয়ে আসছে অন্য দেশ থেকে। এই তথ্য স্বাভাবিকভাবেই দেশের ফুটবলের জন্য খুশি হওয়ার খবর নয়। কিন্তু এটাও সত্যি, এখন আর কোচের দিকে তাকানোর সময় নেই। ব্রাজিলিয়ানরা চাইছে, চ্যাম্পিয়ন হতে। আর আমাদের দেশকে চ্যাম্পিয়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্সেলোত্তি হচ্ছেন একদম আদর্শ লোক।
ক্লাব কোচ হিসেবে আন্সেলোত্তির যা সাফল্য, সেই মাপের কোনও ক্লাব কোচ এখনও পর্যন্ত কোনও জাতীয় দলকে কোচিং করাতে আসেননি। সেক্ষেত্রে বিদেশি কোচ যখন নিতেই হচ্ছে, তখন আন্সেলোত্তি নামটা একদম ঠিকঠাক। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দেশকে ফের চ্যাম্পিয়নের স্বাদ দিতে আসছেন, পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী কোচ। এর থেকে ভালো কিছু হতেই পারে না। যতদূর জানি, আন্সেলোত্তিকে কোচ করার জন্য গত ২ বছর ধরে পিছনে পড়েছিলেন আমাদের দেশের ফুটবল কর্তারা।
আন্সেলোত্তিকে কোচ করার কথা ভাবা হচ্ছে, এরকম খবরটা যখন প্রথম আমাদের দেশে ওগ্লোবো সংবাদমাধ্যম ব্রেক করে, বিশ্বাস করুন, তখনও আমার ঠিক বিশ্বাস হয়নি। ক্লাব পর্যায়ের ওরকম ঈর্ষণীয় কোচিং সাফল্য ছেড়ে তিনি যে আমাদের জাতীয় দলের কোচ হতে পারেন, শুরুতে সত্যিই বিশ্বাস করিনি। সেই অবিশ্বাস্য কাজটাই করে দেখিয়েছেন আমাদের কর্তারা। অবশ্য বিদেশি কোচ না নিয়ে উপায়ও ছিল না। ডরিভল জুনিয়রের কোচিংয়ে আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার কাছে ৪-১ গোলে হারার পর ডরিভলকে জাতীয় কোচের পদে রেখে দেওয়ার কোনও অর্থই ছিল না। আর দেশে এই মুহূর্তে এমন কেউ নেই, যাঁর হাতে এই মুহূর্তে ধুকতে থাকা ব্রাজিল জাতীয় দলের দায়িত্ব দেওয়া যায়। খুব খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে আমাদের জাতীয় দল।
আন্সেলোত্তিকে এমন সময় আমাদের জাতীয় কোচ করা হচ্ছে, বিশ্বকাপের আগে তিনি বেশি সময় পাবেন না। মাত্র এক বছর সময় পাবেন জাতীয় দলকে তৈরি করতে। স্কোলারি যেখানে ৬ বছর ধরে একই দল নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন, সেখানে আন্সেলত্তি হাতে পাবেন মাত্র এক বছর। বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য সত্যিই কম সময়। আর দায়িত্ব নিয়েই সামনের মাসে পরপর দু’টো বিশ্বকাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে হবে আন্সেলোত্তিকে। ভীষণই কঠিন অবস্থা। তবে যে মুহূর্তে বিগ ফিল, লুই ফিলিপ স্কোলারির কথা মাথায় আসছে, মনে হচ্ছে এক বছর সময়টা কোনও সমস্যাই নয়। স্কোলারির কোচিংয়েই মাত্র এক বছরের প্রস্তুতিতে আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি। তাহলে আন্সেলোত্তি পারবেন না কেন? সমস্যা অন্য জায়গায়। স্কোলারির সময়ে জাতীয় দলে যে মানের ফুটবলাররা ছিল, এখন জাতীয় দলটা সেই মানের নয়। তবে আন্সেলোত্তি আছেন। এটাই যা ভরসা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.