নিজস্ব চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের উপর তৈরি হওয়া তথ্যচিত্র উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তথ্যচিত্রের নাম ‘শতবর্ষে ইস্টবেঙ্গল’। এদিন রবীন্দ্র সদনে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গৌতম ঘোষের তৈরি করা তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫৮ মিনিটের এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ১০০ বছরের সামগ্রিক ইতিহাসকে।
সম্প্রতি ভারতসেরা হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দল। এদিন তারাও উপস্থিত ছিল। লাল-হলুদের মহিলা দলের প্রশংসা করতেও দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, “মেয়েরা জিতে এসেছে। তারা তো ইস্টবেঙ্গলকে অহংকার এনে দিয়েছে। গোটা দলকে অভিনন্দন। দলের কোচকেও শুভেচ্ছা। গর্বের ব্যাপার হল ওরা এএফসি মহিলা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। আশা করব, সেখানেও জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আগাম শুভেচ্ছা রইল।”
মমতা আরও বলেন, “আমরা তিন প্রধানকেই অর্থসাহায্য করেছি। যখন ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম, অলিম্পিকে পরাজয়ের পর পার্লামেন্টে বক্তব্য দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, খেলাটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। অ্যাকাডেমি তৈরি না হলে, খেলোয়াড়দের ঠিকমতো প্রশিক্ষণ না দিতে পারলে কীভাবে ভালো পারফরম্যান্স করবে? আমার সময় অনেক অ্যাকাডেমি তৈরি করেছি। একটা সময় খেলাধুলায় বরাদ্দ ছিল ১২৬ কোটি টাকা। আমরা আসার পর তা বেড়ে হয়েছে ৮৪০ কোটি টাকা। চারশোর বেশি খেলার মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে। ফিফাও আমাদের প্রশংসা করেছে।”
মমতার সংযোজন, “ইস্টবেঙ্গল যেন ভালো দল করে। ইমামির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের এগিয়ে যেতে হবে। ইস্টবেঙ্গলও পারবে ভালো দল তৈরি করে চ্যাম্পিয়ন হতে। আশা করি, তারা তা পারবে। ভালো প্লেয়ার নিতে হবে। ১০০ বছর অতিক্রম করছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। দল হেরে গেলে সমর্থকদের খুব কষ্ট হয়। তবে, বাংলার কোনও দল জিতলেই আমার ভালো লাগে। কারণ আমি বাংলার সমর্থক। ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাস নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। তাই আগামীতে কী করব, এখন থেকেই ভেবে এগোতে হবে। বোল্ড আউট করতে গেলে পরিকল্পনা করা তো সবার আগে দরকার। বাচ্চাদের দিকেও নজর দিন। বাংলায় প্রতিভার অভাব নেই। তাই সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। করে দেখাতে হবে। জয় হবেই। এই বিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামতে হবে।”
সব শেষে মমতা বলেন, “ডায়মন্ড হারবার এমন দল করেছে যে, কম সময়ের মধ্যে ওরা আই লিগে উঠে এসেছে। মোহনবাগান তো দুর্দান্ত দল গড়েছে। ওরা আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। মহামেডানও আইএসএলে উঠে এসেছে। তবে মনে রাখতে হবে কম্পিটিশনটা কম্পিটিশনের মতোই থাকা উচিত। তাতে প্রতিদ্বিন্দ্বিতাও জমে ওঠে। মহিলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলে ভীষণ ভালো লাগছে। যৎসামান্য হলেও ওদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে গেলাম।”
ইস্টবেঙ্গলে ক্লাবের শতবর্ষ ঘিরে যে যে পরিকল্পনা পাঁচ বছর আগে নেওয়া হয়েছিল, তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল গৌতম ঘোষের পরিচালনায় তথ্যচিত্র, ‘মশাল’। ২০২০-তে লাল-হলুদের শতবর্ষে ক্লাবকে ঘিরে তথ্যচিত্রর কাজ শুরুও করে দিয়েছিলেন গৌতম ঘোষ। কিন্তু সেই সময় হঠাৎই কোভিডের আক্রমণ বিধ্বস্ত করে দেয় যাবতীয় পরিকল্পনা। শুধু যে শুটের কাজ আটকে যায় এরকমটা নয়। কোভিডের থাকায় সারা বিশ্বের আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। যার ভয়ংকর প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবও। একদিকে কোভিড। আরেকদিকে আর্থিক ধাক্কা। ফলে সাময়িকভাবে আটকে যায় তথ্যচিত্র তৈরির কাজ। যে কাজটা শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে শেষ করতে লেগে গিয়েছে পাঁচ-পাঁচটি বছর। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মশাল’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.