দুলাল দে, দোহা: পরের রাউন্ডে চলে যাওয়া দলগুলির এখন গ্রুপের শেষ ম্যাচে তারকা ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্রাজিলের পর পর্তুগালও এখন এই রাস্তায় হাঁটতে চলেছে। শুক্রবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে দলের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে খেলানো হবে কি না, তা নিয়েই সাংবাদিক সম্মেলনে সংশয় তৈরি করে দিয়ে গেলেন কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। একবার বললেন, “খেলাতেও পারি।” আরেকবার বললেন, “শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেব।” আর তারপরই দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) খেলার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে স্যান্টোস বললেন, “কোরিয়ার বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর খেলার সম্ভাবনা ৫০-৫০।”
গ্রুপের শেষ ম্যাচে রোনাল্ডোর খেলা ঘিরে এই রহস্য তৈরি হওয়ার কারণ, আগের দিন প্র্যাকটিসে অন্য ফুটবলারদের সঙ্গে মাঠে দেখা যায়নি রোনাল্ডোকে। আর তখনই গুঞ্জনটা ওঠে, তাহলে কি রোনাল্ডোও চোট পেয়েছেন! পরে জানা যায়, মাঠের প্র্যাকটিস থেকে সরে দাঁড়িয়ে জিমের প্র্যাকটিসে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। তবে তাঁকে যদি গ্রুপের শেষ ম্যাচে কোরিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্রাম দেওয়া হয়, তার মানে এই নয় যে, শুধুই চোট থাকার জন্য বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন পর্তুগিজ কোচ। আসলে নকআউটে দলের সেরা তারকাকে তরতাজা ভাবে পাওয়ার জন্যই রোনাল্ডোকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন ফার্নান্দো স্যান্টোস।
তবে রোনাল্ডো খেলুন বা না খেলুন, ইতিমধ্যেই কিন্তু চোটের জন্য পর্তুগাল শিবিরে (Portugal Football Team) এখন চিন্তার মেঘ ছেয়ে গিয়েছে। এর কারণে, পিএসজির (PSG) ডিফেন্ডার নুনো মেন্ডেসের চোট। উরুগুয়ের বিরুদ্ধে চোট পেয়ে প্রথমার্ধেই যখন মেন্ডেস মাঠ ছাড়ছিলেন, তখনই সবাই বুঝে গিয়েছিলেন, মেন্ডেসের চোটটা সামান্য নয়। বেশ গুরুতর চোট পেয়েছেন তিনি। তাঁর চোটের পরিমাণ এতটাই গুরুতর যে এদিন পর্তুগিজ কোচ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলতে বাধ্য হন, এই বিশ্বকাপেই আর খেলতে পারবেন না মেন্ডেস। তবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও এই মুহূর্তে দোহা ছেড়ে দেশে ফিরে যাচ্ছেন না পর্তুগিজ ডিফেন্ডার। স্যান্টোস জানান, মেন্ডেস নিজেই চেয়েছেন, বিশ্বকাপটা দলের সঙ্গে থেকে ফুটবলারদের উৎসাহিত করতে। চাইলেই মেন্ডেস ক্লাবে ফিরে গিয়ে রিহ্যাব শুরু করতে পারতেন। কিন্তু পিএসজির থেকে অনুমতি নিয়ে বিশ্বকাপ চলাকালীন জাতীয় দলেই রিহ্যাব করতে চান।
মেন্ডেসের আগেই প্রথম ম্যাচে ঘানার বিরুদ্ধে বড় চোট পেয়েছিলেন ডিফেন্ডার দানিলো পেরেইরা। পাঁজরের তিনটে হাড় ভেঙে যাওয়ায় উরুগুয়ে ম্যাচে মাঠের বাইরেই ছিলেন তিনি। চোটের তালিকায় আছেন মিডফিল্ডার ওটাভিও। ফলে নকআউটে যাওয়ার আগে চোট-আঘাত নিয়ে বেশ চিন্তিত পর্তুগাল শিবির। যে কারণে, গ্রুপের শেষ ম্যাচে রোনাল্ডোকে খেলানোর ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না স্যান্টোস।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পর্তুগিজ কোচ বললেন, “এত কম সময়ের মধ্যে পর পর ম্যাচ খেলতে হচ্ছে বলে সত্যিই সমস্যা হচ্ছে। কম সময়ে বেশি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে বলে ফুটবলাররা চোটের কবলে পড়ছে। আর তাতে দলের মধ্যে হতাশার পরিমাণও বাড়বে। এর মধ্যেই আমরা দলের সেরা তিনজন ফুটবলারকে পাচ্ছি না চোটের জন্য। কিন্তু ফুটবলারদের এভাবে ক্লান্তি গ্রাস করে ফেললে, চোট-আঘাতের খবর আরও বাড়বে।” তাহলে কি পুরো দলটাই ক্লান্তির জন্য হতাশায় ভুগছে? সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নিয়ে পর্তুগিজ কোচ বললেন, “আমার ফুটবলারদের উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি জানি, এই সব সমস্যটা কাটিয়েই ওরা ভাল ফুটবল উপহার দেবে।” সাংবাদিক সম্মেলনে জোরের সঙ্গে বললেও পর্তুগিজ কোচের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে রীতিমতো চিন্তার ছাপ প্রকাশ পাচ্ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.