দীপক পাত্র, আইজল: সমস্যায় পড়ে গেল মোহনবাগান৷ এখনও খেলা শুরু হতে বেশ কয়েকঘণ্টা বাকি৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়েছিল বৃ্ষ্টি। এখনও মেঘে ছেয়ে আছে আইজলের আকাশ৷ বৃষ্টি থামলেও যে কোনও মুহূর্তে ফের নামতে পারে৷ প্রশ্ন হল, বৃষ্টি হলে সমস্যা হবে কেন? বৃষ্টি সমস্যা নয়, অসুবিধা হয় অন্য জায়গায়৷ পাহাড়ের কোলে কোলে মেঘ জমে থাকে৷ ফলে সেই মেঘ পুরো মাঠকে ঢেকে দেয়৷ তখন দশ হাত দূরত্বের লোককে চেনা দায়৷ একা বৃষ্টিতে রক্ষে নেই, তার উপর রয়েছে ঠান্ডা। শীত মানছে না জ্যাকেটেও। সবার প্রশ্ন একটাই, এত ঠান্ডায় কী করে পারবেন মোহনবাগান ফুটবলাররা? যাবতী আশংকা অবশ্য শুধু মোহনবাগান সমর্থকদেরই। মোহনবাগান ফুটবলারদের সঙ্গে কথাবার্তায় পরিষ্কার, এই সব আবহাওয়া কেন্দ্রিক সমস্যার কথা তাঁরা মাথায় আনতেই চাইছেন না। সোনি থেকে ডাফি, প্রত্যেকের সারমর্ম এটাই, ‘পাহাড়ে জয় আসছেই’।
এদিন সকালে আইজল প্র্যাকটিস করল রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে৷ প্র্যাকটিস চলাকালীন বৃষ্টি হচ্ছিল৷ মাঝে মাঝে বৃষ্টি থেমে গেলেও জয়েশ রানে, আলফ্রেডদের দেখাই যাচ্ছিল না৷ পুরো মেঘ ঢেকে দিচ্ছিল মাঠকে৷ এমন পরিস্থিতি হলে খেলা সাময়িক বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না৷ গতকাল স্টেডিয়ামের সামনে স্থানীয় মানুষের নাম দেওয়া পাহাড় জোখাওসেংকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল৷ এদিন মনেই হল না সামনে কোনও পাহাড় আছে৷ স্রেফ মেঘের আস্তরণে ঢাকা পড়ে গিয়েছে৷ এমন হলে হয়তো খেলা হওয়া নিয়মের বেড়াজালে আটকে যাবে৷ কিন্তু সমস্যায় পড়ে যেতে পারে মোহনবাগান৷ যেহেতু বড় দল হিসেবে এই ম্যাচের যাবতীয় চাপ তাদের উপর রয়েছে৷ তাই আকাশের কালো চেহারার মতোই বাগান কর্তাদের মুখাবয়বে ফুটে উঠছে এক ছবি।
শনিবারের ম্যাচে কতগুলো অপশন রয়েছে মোহনবাগানের সামনে। এক, তাদের কাছে এই ম্যাচ জিততেই হবে তা নয়৷ ড্র করলেও চলবে৷ তাহলে শেষ ম্যাচে ঘরের মাঠে জিতলেই কেল্লা ফতে৷ দুই, জিতলে এখানেই নির্ধারিত হয়ে যাবে এবারের আই লিগ৷ ফ্ল্যাগ হয়তো তুলে দিতে পারবেন না টুটু বোস, অঞ্জন মিত্ররা৷ যেহেতু মোহনবাগান-আইজল দু’টি দল ১৬ ম্যাচ খেলে সমান পয়েণ্ট ৩৩ নিয়ে দাঁড়িয়ে৷ সেক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে ড্র করলেও চলবে৷ তবে দু’টো দলের কোচ তথা ফুটবলাররা বুঝে গিয়েছেন, শনিবার তাঁদের কাছে ফাইনাল ম্যাচ৷ শেষ রাউন্ডের ম্যাচকে তাই কেউ গুরুত্বই দিচ্ছেন না৷ সঞ্জয় সেন তো বলেই দিলেন, “পাহাড় জয় করতে পারলে আমরা লিগ জয়ী বলে ধরে নিতে পারি৷ তাই আমাদের যেভাবেই হোক শনিবার জিততে হবে৷ আশাকরি আইজলকে হারাতে কোনও সমস্যা হবে না৷”
এদিকে আইজল এফসিকে শুধু জিতলে হবে না, হারাতে হবে কমপক্ষে দু’গোলে৷ কোচ খালিদ জামিলের কথাতেও সেই এক কথার প্রতিধ্বনি৷ তিনিও বলে ফেললেন, “আমরা কাল ফাইনাল ম্যাচ খেলতে নামছি৷ যদি জিতে যেতে পারি তাহলে শেষ ম্যাচে আমাদের সামনে কোনও দল বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না৷” আইজলের শেষ রাউন্ডের প্রতিপক্ষ হল শিলং লাজং৷ তাও আবার শিলংয়ে গিয়ে খেলতে হবে৷ পাহাড়ি দলগুলোর মধ্যে যতটা না রেষারেষি থাকে তার থেকে বেশি থাকে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন৷ ফলে খালিদ বলতেই পারেন, শিলং লাজংকে হারাতে কোনও সমস্যা হবে না৷ এখন দেখার যাবতীয় মেঘ সরিয়ে কে ঝলমলে রোদের সাক্ষী থাকতে পারে৷
দেখে নিন আইজলের মাঠে মোহনবাগানের প্রাকটিসের ভিডিও:
লিগের অঙ্ক:
মোহনবাগান জিতলে
শেষ ম্যাচের ফল যাই হোক চ্যাম্পিয়ন সোনিরা৷
মোহনবাগান হারলে
দুই বা তার বেশি গোলের ব্যবধানে হারলে চ্যাম্পিয়ন আইজল৷
এক গোলে হারলে ও শেষ ম্যাচে দুই দলের রেজাল্ট এক হলে হেড টু হেড নিয়মে চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান৷
ম্যাচ ড্র হলে
শেষ রাউন্ডে যারা বেশি পয়েন্ট পাবে, চ্যাম্পিয়ন তারা৷ ফল এক হলে হেড টু হেডে ট্রফি কলকাতায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.