সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউন তাল কেটেছে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে। দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও মনের মতো করে করতে পারলেন না ত্রিপুরার দেবু দত্ত। কোনওক্রমে ঘরোয়া নিয়ম পালন করেই বাবার আত্মার শান্তি কামনা করলেন। তিনি জানেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি করোনার মোকাবিলা করা। আর তাই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের বেঁচে যাওয়া অর্থ দান করলেন ত্রাণ তহবিলে।
পেশায় শিক্ষক দেবু দত্তর আর একটা পরিচয় হল তিনি আপাদমস্তক একজন মোহনবাগানি। ধম্ম-কম্ম ত্রিপুরাতে হলেও কলকাতার প্রতি তাঁর টান এই একটি কারণে। মোহনবাগান মাঠে নামলেই মনটা চলে যায় কলকাতায়। তাই শুধু টিভির পর্দাতেই নয়, বারবার ছুটে যান স্টেডিয়ামেও। নিজের প্রিয় ক্লাবের খেলার সাক্ষী থাকতে। সবুজ-মেরুন আই লিগ ট্রফি নিশ্চিত করে ফেলায় দারুণ খোসমেজাজে ছিলেন ভদ্রলোক। কিন্তু করোনার কড়াল গ্রাসে সমস্ত সেলিব্রেশন মাঠে মারা যায়। তারই মধ্যে সংসারে নামে শোকের ছায়া। লকডাউনের মধ্যেই গত ১৩ এপ্রিল আগরতলার একটি হাসপাতালে প্রাণ হারান দেবুবাবুর বাবা। যিনি আবার মনে প্রাণে ছিলেন একজন ইস্টবেঙ্গল সমর্থক।
কিন্তু দেশের এমন পরিস্থিতিতে তো আর লকডাউনের নিয়ম ভেঙে লোক নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো যায় না। তাই দেবু দত্ত ঠিক করে ফেলেন, সেই অর্থ মানুষের হিতেই কাজে লাগাবেন। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। ঘরোয়াভাবে সারলেন সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান। তারপর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের বেঁচে যাওয়া অর্থ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে দেন তিনি। সে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথের হাতে তুলে দেন সেই অর্থ।
দেবুবাবুর বিশ্বাস, এতেই তাঁর বাবার আত্মা শান্তি পাবে। মোহনবাগান ভক্তর এমন মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। অন্যান্য বাগান সমর্থকদের কথায়, দেশের সংকটের দিন গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে এভাবেই অনুপ্রেরণা জোগালেন দেবুবাবু।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.