বাঙালির পয়লা বৈশাখ মানেই নস্ট্যালজিয়া। পোশাক থেকে খাবার, আড্ডা থেকে হালখাতা, সবেতেই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। তবে আজকের বাঙালি কি ততটাই উন্মুখ থাকে নববর্ষ নিয়ে? অতীতের স্মৃতিচারণা এবং আগামী নববর্ষের পরিকল্পনা নিয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ডিজিটালে লিখলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য।
বাঙালির ১২ মাসে তেরো পার্বণ। ফুটবলারদের কাছে পয়লা বৈশাখও তেমন এক উৎসব। তবে পয়লা বৈশাখে আগের মতো সেই গরিমা নেই। কারণ বৈশাখের প্রথমদিন ক্লাবগুলিতে বারপুজো হলেও মাঠে বল গড়ায় না। কয়েক দশক আগেও ছবিটা ছিল অন্যরকম। নববর্ষেই শুরু হত ফুটবল মরশুম। যা নিয়ে উন্মাদনা থাকত চরমে। নিষ্ঠাভরে বারপুজো হত ফুটবলারদের উপস্থিতিতে। একটাই প্রার্থনা থাকত, গোটা মরশুম যেন ভালো কাটে। এখন তো পয়লা বৈশাখের মধ্যে গত মরশুমই শেষ হচ্ছে না। তাই এখন ফুটবলবর্ষ বদলে গিয়েছে। সেই সময় নিজের প্রিয় দলের নতুন ফুটবলারকে দেখতে সমর্থকরা ভিড় জমাতেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাব তাঁবুতে। নবাগতদের নিয়ে টিম করে ৩০-৪০ মিনিটের মতো ম্যাচও হত। তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতেন মাঠে আসা দর্শকরা। এরপর চলত মিষ্টি বিতরণ। দর্শকরাও মিষ্টিমুখে ফিরতেন।
এখানেই শেষ নয়। বিশেষ এই দিনে বিশেষ কিছু দর্শককেও দেখা যেত। যাঁরা খেলা দেখতে যেতেন না। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিন তাঁরা ক্লাবে আসতেন। সঙ্গে থাকত তাঁদের সন্তানরা। হয়তো এভাবেই ময়দানি ঐতিহ্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিচয় করানো হত। তবে, এ প্রসঙ্গে ১৯৮০ সালের কথা মনে পড়ছে। সে বছর জামশেদ নাসিরি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। এর ঠিক আগের বছর মজিদ মজিদ বিসকারও ইস্টবেঙ্গলে সই করেন। তাঁদের দেখতে সে বছর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে ভিড় উপচে পড়েছিল। নববর্ষকে ঘিরে এমন উন্মাদনা এখনকার প্রজন্ম কিন্তু ভাবতেও পারবে না।
পয়লা বৈশাখে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দু’টো ক্লাবেই যাই। এ বছরেও যে তার ব্যতিক্রম হবে না। আসলে মাঠের টানই বাড়িতে থাকতে দেয় না। খেলোয়াড়ি জীবনে যেভাবে বারপুজোয় যোগ দিতাম, এবারও তার অন্যথা হবে না। সিনিয়র ফুটবলারদের নিয়ে তো কৌতূহল থাকে সমর্থকদের মধ্যে। সেই কৌতূহলও মেটানোর চেষ্টা করব। রুটিনে খাওয়াদাওয়া তো রয়েইছে। এই দিনটা হল অন্যরকম আবেগ, অন্যরকম ভালোবাসা, অন্যরকম প্রার্থনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.