স্টাফ রিপোর্টার: পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হওয়ায় নিজেকে গর্বিত বলে মনে করছেন দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়া (Devendra Jhajharia)। প্রতিবন্ধী অ্যাথলিটদের মধ্যে এই প্রথম একজন ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পেলেন। তাই তাঁর ধারণা, এই সম্মান প্যারা অ্যাথলিটদের আরও বেশি উৎসাহিত করবে। প্যারা অলিম্পিকে সোনা জয়ী ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের নাম ২৪ ঘন্টা আগে পদ্মভূষণ হওয়ার জন্য ঘোষণা করা হয়।
তিনি দু’টো সোনা জিতেছিলেন ২০১৬ ও ২০০৪ অলিম্পিকে। এবার টোকিও অলিম্পিকে অবশ্য রুপো পান। “শুধুমাত্র প্যারা স্পোর্টসের জন্য এটা বিশাল তা কিন্তু নয়। দিব্যাঙ্গদের সম্প্রদায়ের কাছেও এই পুরস্কার একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্যারা অ্যাথলিটদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটতে বাধ্য। স্বভাবতই দেশের জনগণ এই পুরস্কারের জন্য অবশ্যই খুশি হবেন।” সংবাদসংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন ঝাঝারিয়া। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে ঝাঝারিয়া আরও বলেছেন, “প্রথমবারের মতো দেশের একজন প্যারা অ্যাথলিটকে এই সম্মানের জন্য বেছে নেওয়া হল। এর জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্যারা অ্যাথলিটদের প্রতি তাঁর যে নজর রয়েছে, প্রয়োজনীয় যত্ন নেন, এটাই হল তার উদাহরণ। তাই সমগ্র প্যারা অ্যাথলিট সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
এবার টোকিও প্যারা অলিম্পিকে ভারত মোট ১৯টা পদক পেয়েছিল। যার মধ্যে ছিল পাঁচটি সোনা। জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া টোকিও অলিম্পিকে সোনা পান। এই দু’জনের সঙ্গে সুমিত আন্টিলকেও পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। ঝাঝারিয়া মনে করছেন, জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের কাছে এটা বড় প্রাপ্তি। “জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের কাছে এটা একটা বড় সম্মান। তরুণদের খেলাধূলো করতে দারুন অনুপ্রাণিত করবে।” জানান ঝাঝারিয়া।
মাত্র আট বছর বয়সে গাছ থেকে পড়ার সময় বিদ্যুতের শক লেগে হাত খোয়াতে বাধ্য হন। গত দু’দশকে প্যারা স্পোর্টসে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে তা এককথায় মেনে নিচ্ছেন ঝাঝারিয়া। “বিশাল চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে খেলা শুরু করেছিলাম। অনেকে বলেছিল, একজন প্রতিবন্ধী হয়ে কতটা খেলতে পারবে। এখন অনেকে ঠিক উলটোটা বলছে। অনেকের মুখে শুনি, দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়ার মতো হও। ২০০৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে পকেট থেকে অর্থ খরচ করতে হয়েছিল। এখন তো প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে।” ঝাঝারিয়া এই সম্মান তাঁর প্রয়াত বাবাকে উৎসর্গ করতে চান। ২০২০’র অক্টোবরে যিনি মারা গিয়েছেন। “আসলে বাবা সবসময় চাইতেন আমি একজন বড় অ্যাথলিট হই। তিনি আমার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অথচ এখন তিনি আমার এই সম্মান দেখতে পেলেন না। তাই এই পুরস্কার আমি বাবাকে উৎসর্গ করছি।” ঝাঝারিয়া ২০০৪ অ্যাথেন্স ও ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সোনা পান। মাঝের দু’টো অলিম্পিক ২০০৮ বেজিং ও ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে তাঁর ইভেন্ট তালিকাভুক্ত ছিল না। কিন্তু টোকিও অলিম্পিকে পদক জিতে সর্বকালের সবচেয়ে সুসজ্জিত ভারতীয় প্যারা অ্যাথলিট হয়ে উঠেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.