আর্শাদ নাদিম।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবার রোজগারপাতি বিশেষ ছিল না। জ্যাভলিন ছোড়া যখন শুরু করলেন পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিম, তখন কোনওক্রমে গ্রামবাসীদের এবং স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে প্রশিক্ষণ চলত। অলিম্পিকের আগে দীর্ঘদিন বিশ্বমানের জ্যাভলিনও ছিল না তাঁর কাছে। সেই আর্শাদ নাদিম ফের অলিম্পিক মানচিত্র তুলে ধরলেন পাকিস্তানের নাম।
১৯৯২ সালের বার্সেলোনা গেমসের ৩২ বছর পর অলিম্পিকে ফের পদক জয় পাকিস্তানের। সে বার হকির ব্রোঞ্জ জিতেছিল পাকিস্তানের পুরুষ দল। এ বার পুরুষদের জ্যাভলিন থ্রোয়ে সোনা জিতলেন আর্শাদ। তাও ৯২.৯৭ মিটার দূরত্বে জ্যাভলিন ছুড়ে নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে। পাকিস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে অলিম্পিক্সে ব্যক্তিগত সোনা জিতলেন। প্রশ্নাতীতভাবেই ইতিহাসের খাতায় তিনি নাম লেখালেন পাকিস্তানের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদ হিসাবে।
১৯৮৪ সালে পাকিস্তান শেষবার সোনা পেয়েছিল অলিম্পিকে। সেবারও হকি দলের সুবাদে অলিম্পিক পোডিয়ামে বেজেছিল পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত। ১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের হয়ে ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন বক্সার হুসেন শাহ। তার পরই আর্শাদের এই সাফল্য। নাদিমের সাফল্যের গল্পটা রূপকথার মতোই। নাদিম কয়েক মাস আগেও ঠিক মতো অনুশীলন করতে পারছিলেন না। আধুনিক একটিও জ্যাভলিন ছিল না তাঁর কাছে। গত সাত আট বছর ধরে একটি জ্যাভলিন নিয়েই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নামছিলেন।
পাকিস্তানের তারকা জ্যাভলিন থ্রোয়ার এ বছরের মার্চ মাসে জানিয়েছিলেন, ৭-৮ বছর ধরে তিনি স্থানীয় জ্যাভলিন দিয়ে অনুশীলন করছেন। যা থেকে চোট-আঘাতের সম্ভবনা রয়েছে। তিনি চোট পেয়েছিলেনও। যার জন্য অস্ত্রোপচারও তাঁকে করাতে হয়েছিল। সব কিছুতেই তাঁকে ভরসা করতে হয়েছে অন্যের সাহায্যের। আসলে অর্থনৈতিকভাবে ভরাডুবির মধ্যে দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানের অলিম্পিক সংস্থা, জ্যাভলিন সংস্থা সবারই হাঁড়ির হাল। কেউই সেভাবে সাহায্য করতে পারেননি নাদিমকে। সেকারণে কখনও তাঁকে সাহায্য নিতে হয়েছে প্রতিবেশী, বন্ধুদের। কখনও সাহায্য পেয়েছেন Olympic Solidarity scholarship-এর। কখনও ক্রাউডফান্ডিংও করেছেন। দীর্ঘদিন কোনও স্পনসর ছিল না নাদিমের। পাকিস্তানকে অলিম্পিক মানচিত্রে তুলে ধরার পর নিশ্চয়ই স্পনসরের আশা করতে পারেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.