ভারত: ১৬৯/৯ (পুণম-৪৭, সুষমা-৩৩)
পাকিস্তান: ৭৪ (নাহিদা-২৩)
৯৫ রানে জয়ী ভারত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬টি উইকেট খুইয়ে ভারতের স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ১১১ রান। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে অদ্ভুত এক আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। আর উলটো দিকে ফ্যাকাসে হয়ে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখগুলি। তাঁদের আশঙ্কা, এই বুঝি ১৮ জুনের সেই হতাশার রাত ফিরতে চলেছে ডার্বিতে। যেদিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে বিপর্যস্ত হয়েছিল বিরাটবাহিনী। কিন্তু নাহ্, রবিবার বিশ্বকাপের মহারণে ফিরল ৪ জুনের এজবাস্টনের সুখকর স্মৃতি। পাক মহিলা দলকে হেলায় হারিয়ে দিলেন মিতালি রাজরা। আন্ডারডগ হয়েও ট্রফি জিতে তাক লাগাতে পেরেছিলেন সরফরাজ আহমেদরা। কিন্তু এদিন কোনও অঘটন ঘটল না।
পরিসংখ্যান বলছে, এখনও পর্যন্ত একদিনের ক্রিকেটে ভারতীয় প্রমীলাবাহিনীকে হারাতে পারেনি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা। সেই রেকর্ডই অক্ষুণ্ন থাকল এদিন। ধারে ও ভারে অনেকটাই এগিয়ে থাকা ভারতীয়দের কাছে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেল পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে বিরাট কোহলিদের ব্যর্থতা ঢেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের অনেকখানি স্বস্তি দিলেন একতা বিস্ত, ঝুলন গোস্বামীরা। ভারতীয় স্পিন ঝড়েই বেসামাল হয়ে পড়লেন সানা মীররা।
বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চ। আর সেখানেই ভারত-পাক হাইভোল্টেজ লড়াই। কিন্তু তার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই দেশের সমর্থকদের সেভাবে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। মওকা মওকা ভিডিও তৈরি করে জয়ের আগেই কেউ কোনও দলকে জিতিয়ে বা হারিয়ে দেয়নি। আর এসব বিষয়গুলিই বোধহয় আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াল মিতালিদের কাছে। দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে, ফ্ল্যাশলাইটের ঝলকানির পরোয়া না করে, প্রত্যাশার বোঝা দূরে সরিয়ে রেখেই মাঠে নেমেছিলেন তাঁরা। জানতেন, মাঠের লড়াইয়ের জবাবটা তাঁদের মাঠেই দিতে হবে। তার উপর গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই পাকিস্তানের কাছেই হারতে হয়েছিল ভারতকে। সেই প্রতিশোধের আগুনও জ্বলছিল ভিতর ভিতর। তাই লড়াইয়ে নামার আগে প্রতিপক্ষকে একেবারেই হালকাভাবে নেওয়ার ভুল করেননি তাঁরা। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের সূক্ষ্ম ফারাকেই এল সম্মানীয় জয়।
তবে হালফিলে খুব একটা সাফল্য না পাওয়া পাকিস্তানের বোলিংয়ের প্রশংসা করতেই হয়। নাশরা সান্ধু যেভাবে একে একে পুণম রাউত, দীপ্তি শর্মা, মিতালি রাজকে ফেরালেন, তাতে বেশ চাপে পড়ে যায় ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডার। একাই ঝুলিতে ভরেন চারটি উইকেট। পাক বোলারদের পাশাপাশি এদিন পাক দলের আরেকজনের কথা উল্লেখ করতেই হয়। উইকেটকিপার শিদ্রা নাওয়াজ। তাঁর নেওয়া ডিআরএস-এর সিদ্ধান্তেই অল্প রানে বাধা পড়ল উইমেনস টিম ইন্ডিয়া। গত ম্যাচে দুর্দান্ত পারফর্ম করা স্মৃতি মন্দনাও (২) এদিন টিকতে পারেননি। ভরাডুবির সময় সুষমা বর্মাই (৩৩) দলকে ১৫০ রানের গণ্ডি টপকাতে সাহায্য করলেন। তবে এদিন ভারতের জয়ের কৃতিত্ব প্রাপ্য বোলারদেরই। পাঁচ-পাঁচটি উইকেট পেলেন একতা। যার জেরে ১০০ রানও করতে পারল না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা। মাত্র ৯৫ রানে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়ে চলতি টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রইল মিতালি অ্যান্ড কোম্পানি। উলটো দিকে, গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল পাকিস্তানের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.