সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাকাবাবু সন্তুকে ঠিক উত্তর দিতে দিতেও দিয়ে উঠতে পারেননি। ‘তাকে’ নিয়ে বিশ্বজুড়ে গল্প বিস্তর। মিথ ও মিথ্যা, লোককথা ও কল্পনা, বিশ্বাস ও যুক্তি- প্রতিটার মধ্যবর্তী কোনও সূক্ষ্ম রেখা দিয়ে হেঁটে গিয়েছে ‘সে’। রয়ে গিয়েছে অধরা। তবে এবার বিজ্ঞানীরা ‘তাকে’ নিয়ে যাবতীয় ধোঁয়াশায় জল ঢাললেন। জানালেন, ‘সে’ আর কিছুই নয়, সামান্য ভল্লুক মাত্র।
কথা হচ্ছে তুষারমানব বা ইয়েতির। এটি দানবাকার শিম্পাঞ্জী সদৃশ প্রাণী বলে অনুমেয়। এর অস্তিত্ব নিয়ে বিজ্ঞানীমহলে জলঘোলা কম হয়নি। নিউ ইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অফ বাফেলোর কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের গবেষকদের দাবি কিন্তু অন্য। বুধবার তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, প্রাণীটি আসলে ভল্লুক। তাদের হাড়, দাঁত, চামড়া, চুল ও মুখের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছন তাঁরা। ভল্লুকগুলি তিনটি ভিন্ন প্রজাতির। এশিয়ান ব্ল্যাক, টিবেটান ব্রাউন ও হিমালয়ান ব্রাউন বিয়ার। প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার বছর আগে হিমালয়ে এক ভয়াবহ তুষার ধস নামে। পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ব্রাউন বিয়ারের দল। আজ তারা বিক্ষিপ্তভাবে তিব্বতি হিমালয় ও ভারতীয় হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায়। এদের মধ্যে হিমালয়ান ব্রাউন বিয়ার বা আরসাস আর্কটস ইসাবেলিনাস আবার বিলুপ্তপ্রায়। জানালেন গবেষক শার্লট লিন্ডকভিস্ট।
ভারত, নেপাল, ভুটান ও তিব্বতের হিমালয়ান রেঞ্জে সাধারণত এইসব ভল্লুকদের দেখা যায়। তাও খুব বেশি না। এদের অন্য প্রজাতিগুলিকে আবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বরফাবৃত পাহাড়ে দেখা যায়। এবং তাদেরই দৈত্যাকার হিমমানব হিসাবে গুলিয়ে ফেলেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। লিন্ডকভিস্ট বলছেন, ইয়েতিদের নিয়ে প্রচুর লোককথা ও রোমহর্ষক-রোমাঞ্চকর কাহিনি প্রচলিত বিশ্বজুড়ে। তাই পাহাড়ে বেড়াতে বা সামিটে এসে যখন কেউ এরকম ভল্লুকের দেখা পান, তার সঙ্গে ওই লোককথা গুলিয়ে ফেলেন। ‘হ্যালুসিনেট’ করে বসেন। মিথকে করে তোলেন বাস্তব। আতঙ্ক ছড়ায় পারিপার্শ্বে। কিন্তু আসলে সেরকম কিছুই নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.